অনলাইন
সহযোগীদের খবর
পক্ষ ভারী করছে দলগুলো
অনলাইন ডেস্ক
(২ সপ্তাহ আগে) ২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:২২ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ প্রতিদিন
‘পক্ষ ভারী করছে দলগুলো’-এটি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচন চায় বিএনপি। দাবি আদায়ে ‘সর্বদলীয় জনমত’ গঠনের লক্ষ্যে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত দলগুলোর পাশাপাশি ডান, বাম ও ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে দলটি। অন্যদিকে গণ অভুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের গঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলছে, সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের পর জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। দাবি আদায়ে তারাও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী বলছে, নির্বাচনের আগে খুনিদের বিচার দৃশ্যমান ও প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। এসব ছাড়া জনগণ নির্বাচন মেনে নেবে না। নির্বাচনি প্রস্তুতির পাশাপাশি জামায়াতও নিজেদের অবস্থানের ভিত শক্তিশালী করতে বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করে চলেছে। সব মিলিয়ে সুবিধামতো সময়ে নির্বাচনের দাবিতে দেশের প্রধান দলগুলো পক্ষ ভারী করছে।
‘সর্বদলীয় জনমত’ গঠনে সিরিজ বৈঠক করছে বিএনপি: চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আদায়ে সর্বদলীয় ঐকমত্য গঠন করতে চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে রবিবার সিপিবি, বাসদসহ বামধারার দলগুলো ও গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। আর আগে শনিবার যুগপতের অন্যতম শরিক ১২-দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। গতকাল বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয় বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। এর বাইরে ইসলামপন্থি ও তরিকতপন্থি কয়েকটি দলের সঙ্গে ভিতরে ভিতরে বিএনপির সিনিয়র নেতারা যোগাযোগ রাখছেন। এর মধ্যে একটি দলের চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের জানান, তিনি ও তাঁর দলের নেতারা নির্বাচন সামনে রেখে একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গঠনে কাজ করছেন। বিএনপির সঙ্গে তাঁদের নির্বাচনি সমঝোতা হতে পারে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারাই রাজপথে ছিলেন, আমরা সবার সঙ্গে কী করা যায় তা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি। এ আলোচনা শেষে কী করা যায় বা কী করা যায় না তা দেশবাসীকে জানানো হবে। আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে চায় বিএনপি।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়কারী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছি। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ডিসেম্বরের পর আমাদের দেশে প্রাকৃতিক অনেক দুর্যোগের শঙ্কা থাকে। এ ছাড়া রোজা শুরু হবে। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরই জাতীয় নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময়।
সংস্কার শেষে নির্বাচনের দাবিতে বৈঠক করছে জামায়াত ও এনসিপি: জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপিসহ কয়েকটি ইসলামি দল নির্বাচন প্রশ্নে ডিসেম্বরের মধ্যে থাকতে চায় না। প্রকাশ্যে এসব দল সংস্কার সম্পন্ন ও আওয়ামী লীগের বিচার শুরুর পর নির্বাচনের দাবি তুলছে। জামায়াত বলছে, নির্বাচনের আগে খুনিদের বিচার দৃশ্যমান ও প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার শনিবার বান্দরবানে সমাবেশে বলেন, সংস্কারের তিনটি ন্যূনতম শর্ত পূরণ হলে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত রূপরেখার মধ্যে জামায়াত নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপার বিবেচনা করবে। তিনটি শর্ত ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধন করে প্রথমত নির্বাচন কমিশন, বিচারব্যবস্থাসহ রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার করতে হবে। শেখ হাসিনাসহ ফ্যাসিস্ট সরকারের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দৃশ্যমান অবস্থায় নিয়ে আসতে হবে। অন্যটি হচ্ছে, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন।
এদিকে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ও নতুন প্রেক্ষাপটে জামায়াত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এর মধ্যে চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ১২-দলীয় জোট, জাকের পার্টি, লেবার পার্টি, খেলাফত মজলিস ও ফরায়েজী আন্দোলন উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির আবদুল মাজেদ আতাহারী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের (একাংশ) আমির আবু জাফর কাসেমী, জামিয়া মাদানিয়ার মুহতামিম মনিরুজ্জামান কাসেমী, জনসেবা আন্দোলনের আমির ফখরুল ইসলামসহ ব্যক্তিপর্যায়ে বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষক ও আলেমের সঙ্গে জামায়াতের আমির পৃথক মতবিনিময় করেছেন। এদিকে গণ অভুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া এনসিপি সংস্কারের পর নির্বাচনের দাবিতে বৈঠক শুরু করেছে। রবিবার পুরানা পল্টনে খেলাফত মজলিসের সঙ্গে এ বৈঠক করে। বৈঠকে উভয় দল গণ অভ্যুত্থানে শহীদদের মর্যাদার সাংবিধানিক স্বীকৃতি; আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন স্থগিত ও রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা; জুলাই গণ অভ্যুত্থানকালে গণহত্যা, শাপলা চত্বরে হত্যা, পিলখানায় বিডিআর হত্যাসহ বিগত ১৫ বছরে গুম, খুন, হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচার; মৌলিক সংস্কারের জন্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ প্রণয়ন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা বিষয়ে একমত হয়েছে।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়নের পর সংসদ নির্বাচন চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি। তিনি বলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইসি থেকে নির্বাচনের সার্টিফিকেশন দেওয়া, প্রার্থীর হলফনামা তদন্ত করে সত্যতা নিরূপণ করা, নির্বাচনি সহিংসতা বন্ধে আচরণবিধি ও ব্যয়ের বিধিতে পরিবর্তন আনা, ঋণখেলাপিকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখা, হলফনামায় ভুল তথ্য থাকলে প্রার্থিতা বাতিল ও নির্বাচিত হলেও যেন তারা সংসদে থাকতে না পারে সে ব্যবস্থা করা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এগুলো বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচনে যাওয়া ও ভোটাধিকার প্রয়োগ সম্ভব হবে না।
প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ‘নিবন্ধন চায় ৬৫ রাজনৈতিক দল, বেশির ভাগ নামসর্বস্ব’। খবরে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের কাছে নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছে ৬৫টি রাজনৈতিক দল। আরও ৪৬টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে সময় চেয়েছে।
নিবন্ধন পেতে আগ্রহী দলগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি’, ‘বাংলাদেশ শান্তির দল’, ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’, ‘জাতীয় ভূমিহীন পার্টি’, ‘বাংলাদেশ বেকার সমাজ’, ‘বাংলাদেশ জনপ্রিয় পার্টি’, ‘জনতার কথা বলে’। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এসব দলের বেশির ভাগই নামসর্বস্ব। তাদের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ে না।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গত ১০ মার্চ নতুন দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। আবেদনের শেষ সময় ছিল ২০ এপ্রিল। ইসি সূত্র জানায়, ওই দিন পর্যন্ত আবেদন জমা দেওয়া এবং বাড়তি সময় চাওয়া দলের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১১।
দলগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার আবেদনের সময় বাড়িয়েছে ইসি। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ২২ জুন পর্যন্ত নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা যাবে। নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিবন্ধনের আবেদনের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিল। এ ছাড়া আরও কিছু দলের পক্ষ থেকেও এ অনুরোধ জানানো হয়।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ রোববার সাংবাদিকদের বলেন, অনেক দলের নিবন্ধনে সময় বাড়ানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই মাস সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এখন ইসিতে নিবন্ধিত দল আছে ৫০টি। কোনো দলকে দলীয় প্রতীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে হলে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হতে হয়। এ নিবন্ধন পেতে কিছু শর্ত পূরণ করার বিধান আছে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন এসব শর্ত কিছুটা সহজ করার সুপারিশ করেছে। তবে সে সুপারিশ এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। বিদ্যমান আইনে, অর্থাৎ আগের শর্তেই নিবন্ধনের আবেদন চেয়েছে ইসি। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন আরও বাড়তে পারে।
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৯৩টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। তবে বেশির ভাগ দলই ছিল নামসর্বস্ব। প্রাথমিক নথিপত্র বাছাইয়েই বাদ পড়েছিল ৮১টি দলের আবেদন। প্রাথমিক বাছাই শেষে গণ অধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ ১২টি দলের মাঠপর্যায়ের তথ্য যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে শেষ পর্যন্ত নিবন্ধন দেওয়া হয়েছিল মাত্র দুটি দলকে।
যুগান্তর
‘গণহত্যার দায় হাসিনার’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। তদন্তে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধেও গণহত্যার সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। শেখ হাসিনাসহ তারা সবাই গণহত্যার নির্দেশদাতা। তারা ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে বৈধ ও অবৈধ প্রক্রিয়ায় সরকারি বাহিনীগুলোকে ব্যবহার করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে তদন্ত সংস্থা সোমবার এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। এই আট আসামির মধ্যে চারজন গ্রেফতার আছেন, আর পলাতক রয়েছেন অন্য চারজন।
৯০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনটি ১৯৫ দিনে সম্পন্ন হয়েছে। এতে মোট ৭৯ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের পর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে এটিই প্রথম পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন।
তাজুল ইসলাম বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় প্রধান আসামি শেখ হাসিনাসহ তার সুপিরিয়র কমান্ডারদের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে আরেকটি তদন্ত হচ্ছে। কারণ, সারা দেশে যেসব এলাকায় অপরাধ হয়েছে, প্রতিটি অপরাধের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন দায়) আলাদাভাবে তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে, যা খুব তাড়াতাড়ি উপস্থাপন করতে পারব।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীর চানখাঁরপুল এলাকায় এই আসামি নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিককে গুলি করে। তারা শহিদ হন।
কালের কণ্ঠ
দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘আট পুলিশের বিরুদ্ধে প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন’। খবরে বলা হয়, ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় গুলি করে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
গত রবিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যেসব মামলা হয়েছে, তার মধ্যে এটিই প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন।
গতকাল সোমবার এ নিয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
ব্রিফিংয়ে তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন তিনি। চিফ প্রসিকিউটরের তথ্য মতে, প্রতিবেদনটি ৯০ পৃষ্ঠার। এতে সাক্ষী হিসেবে ৭৯ জনের জবানবন্দি, ১৯টি ভিডিও ফুটেজের বর্ণনা, বিভিন্ন প্রত্রিকায় প্রকাশিত ১১টি প্রতিবেদন, দুটি অডিও রেকর্ডের অনুলিপি, ছয়টি ডেথ সার্টিফিকেট এবং আরো ১১টি দালিলিক নথি রয়েছে। মামলাটির তদন্তকাজ শেষ করতে সময় লেগেছে ছয় মাস ১৩ দিন।
তদন্ত প্রতিবেদনের অভিযোগে বলা হয়, ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আসামিরা নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়াকে গুলি করে হত্যা করে।
হাবিবুর রহমান ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা জোনের সাবেক এডিসি শাহ আলম মো. আকতারুল ইসলাম ও এসি মো. ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পুলিশ পরিদর্শক আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল সুজন, ইমাজ হোসেন ও নাসিরুল ইসলাম। তাঁদের মধ্যে চারজন পলাতক।
সমকাল
‘ন্যূনতম জাতীয় মজুরি নির্ধারণের সুপারিশ’-এটি দৈনিক সমকালের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রমিক ও তাঁর পরিবারের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন উপযোগী মজুরির অধিকার নিশ্চিতে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি কাঠামো নির্ধারণের সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে মজুরি নির্ধারণ পদ্ধতি উন্নয়ন, বোর্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কাঠামোগত সংস্কারে স্থায়ী মজুরি কমিশন গঠন এবং জাতীয় ও খাতভিত্তিক মজুরি তিন বছর পরপর মূল্যায়নের মাধ্যমে বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কোনো পেশায় জাতীয় মজুরি নেই। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের ৫৮টি পেশায় ন্যূনতম মজুরি কাঠামো রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়া এবং সম্মিলিত দরকষাকষির ক্ষেত্রে অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন চর্চা সহজ করার সুপারিশ করেছে কমিশন। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কোনো প্রতিষ্ঠানের ২০ শতাংশ শ্রমিক কিংবা কর্মীর স্বাক্ষরের ভিত্তিতে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য যোগ্য বিবেচনা করা হয়। কমিশন বলছে, এ পদ্ধতির পরিবর্তে ইউনিয়ন করতে ইচ্ছুক শ্রমিকের মোট সংখ্যার ভিত্তিতে ট্রেড নিবন্ধন দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কত শ্রমিকের সই প্রয়োজন হতে পারে, তা নির্ধারণে দ্রুত একটি ত্রিপক্ষীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছে কমিশন। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সব খাতের শ্রমিকের জন্য সমানভাবে শ্রম আইনের আওতায় ট্রেড ইউনিয়নের সুযোগ রাখার কথা বলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ৪৬০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছে শ্রম সংস্কার কমিশন। এতে শ্রম খাতের উন্নয়নে মোট ২৫টি সুপারিশ করা হয়। শ্রম খাতের সব অংশীজন, বিশেষ করে বিভিন্ন শ্রমিক-কৃষক, পেশাজীবী সংগঠন, উদ্যোক্তা, মানবাধিকার সংগঠন এবং দেশি, আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ পঞ্চাশের মতো অংশীজনের মতামত গ্রহণ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন-নীতি, গবেষণা, অনলাইন মাধ্যম থেকে জনগণের মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার গত ১৭ নভেম্বর শ্রম খাত সংস্কারে করণীয় নির্ধারণের সুপারিশ চেয়ে ১০ সদস্যের এ কমিশন গঠন করে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমদ কমিশনের নেতৃত্ব দেন।
ইত্তেফাক
দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ‘মেয়র-চেয়ারম্যান পদে সরাসরি নির্বাচন না করার প্রস্তাব সংস্কার কমিশনের’। খবরে বলা হয়, স্থানীয় সরকারের পাঁচ প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্যক্তি (মেয়র, চেয়ারম্যান) পদে সরাসরি নির্বাচন না করার প্রস্তাব দিয়েছে এ সংক্রান্ত সংস্কার কমিশন। এই প্রস্তাব গৃহীত বা বাস্তবায়ন হলে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের অধিকার খর্ব হবে। তাতে মেম্বার-কাউন্সিলরদের হাতে চলে যাবে ভোটাধিকার।
নির্বাচন-বিশেষজ্ঞদের মতে, সংস্কার কমিশনের এধরনের সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে কেনা-বেচার হাঁট বসবে। নির্বাচনে এটি আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্রের একটা মডেলে পরিণত হবে। জনগণ জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। নির্বাচনি ব্যবস্থায় ‘কেনা-বেচার হাট’ বসবে। এ প্রক্রিয়াকে ৬৫ বছর আগের আইয়ুব খানের ‘মৌলিক গণতন্ত্র’ ব্যবস্থার সাথে তুলনা করছেন অনেকে।
এদিকে, এ নিয়ে দুই সংস্কার কমিশনের বিপরীতমুখী মতামতে জটিলতাও দেখা দিয়েছে। ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন সংস্কার কমিশন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে স্থানীয় সরকারের সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের সুপারিশ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে জনগণের কোনো ভোটাধিকারের কথা রাখা হয়নি। কমিশন এসব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নির্বাচিত করার দায়িত্ব মেম্বার এবং কাউন্সিলরদের উপর ন্যস্ত করার প্রস্তাব করেছে।
এর আগে ড. তোফায়েল আহমেদ যখন নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সদস্য ছিলেন, দেশের সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে চেয়ারম্যান, মেয়রসহ শীর্ষ পদে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচন অব্যাহত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কমিশনের সাত সদস্যের মধ্যে ছয়জন সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিলেও, একমাত্র সদস্য তোফায়েল আহমেদ পরোক্ষ নির্বাচনের প্রস্তাব দেন। ওই কমিশনে পরোক্ষ নির্বাচনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হওয়ার দুই মাস পরে ড. তোফায়েল আহমেদ স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান মনোনীত হন। এরপর গত রবিবার তিনি প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৫১টি প্রধান সুপারিশ সম্বলিত চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
নয়া দিগন্ত
‘১৯ নৌকায় বাংলাদেশ ছেড়ে গেল শতাধিক সদস্য’-এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, বান্দরবানের থানচির দুর্গম এলাকায় পাহাড়ি সম্প্রদায়ের একটি বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া আরাকান আর্মির শতাধিক সদস্য সরে গিয়ে মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে। রোববার এসব সদস্যরা উপজেলার রেমাক্রি, তিন্দুসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সাঙ্গু নদীপথে ১৯টি ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে তারা সীমান্তের দিকে চলে যায়। সীমান্তের ওপারে ডচন রাজ্যের লাবওয়া ক্যাম্পে তারা অবস্থান নিয়েছে। এ ক্যাম্পটি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছ থেকে আরাকান আর্মি গত বছরের প্রথম দিকে দখল করে নেয়। এ ছাড়া পার্শবর্তী তুপুই ক্যাম্পেও তারা অবস্থান নিয়েছে। ওই দিন থানচির রেমাক্রি বাজারের কাছে বর্ষবরণ সাংগ্রাই উৎসবের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর প্রশাসনের টনক নড়ে। আরাকান আর্মির সদস্যরা থানচির যেসব এলাকায় অবস্থান করছিল সেসব এলাকায় তাদের অস্থায়ী ক্যাম্পগুলো ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় স্থানীয় মারমা ও রাখাইন সম্প্রদায়ের সাথে আরাকান আর্মি সদস্যরা পোশাক পরিহিত অবস্থায় জলকেলি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মেতে আছে। সেখানে বাংলাদেশের পতাকার পাশাপাশি রাখাইনের একটি পতাকাও উড়তে দেখা যায়। ১৬ এপ্রিল রেমাক্রি ঝর্নার কাছে সাঙ্গু নদীর তীরে এ উৎসবটি হয়। পরে এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানাভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের ফেসবুক পেইজে ভিডিওটি আপলোড করে। থানচির দুর্গম এলাকায় আরাকান আর্মি তাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ভিডিও ছবিগুলো তাদের পেইজে আপলোড করে বলে জানা গেছে। পরে এ ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে ভাইরাল হয়ে পড়লে প্রশাসন ও নিরাপত্তাবাহিনীর নড়েচড়ে বসে।
বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘ট্রাম্প ঘোষিত অতিরিক্ত ১০% শুল্কভারও নিতে চাচ্ছেন না ক্রেতারা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশভেদে ভিন্ন ভিন্ন হারে রেসিপ্রোকাল বা পাল্টা শুল্কারোপের ঘোষণা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে প্রত্যেক দেশের ওপর বহাল রাখা হয় ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক। দেশটিতে পোশাক সরবরাহকারী বাংলাদেশী তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানিতে গড়ে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ শুল্ক আদায় করা হতো। এখন পাল্টা শুল্ক বাবদ অতিরিক্ত ১০ শতাংশের ভার এককভাবে ক্রেতারা নিতে চাচ্ছেন না। শুল্কের একটি অংশের ভার তারা রফতানিকারককে বহন করতে বলছেন। ক্ষেত্রবিশেষে অতিরিক্ত শুল্কের পুরোটাই রফতানিকারককে পরিশোধে চাপ দেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয় করে এমন উল্লেখযোগ্য ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ওয়ালমার্ট, কোহলস, অ্যামেরিকান ঈগল, গ্যাপ, লিভাইস, টার্গেট, পিভিএইচ, নিউইয়র্কারসহ আরো বেশকিছু ব্র্যান্ড। এদের মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ঢাকা কার্যালয়ে কর্মরতদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শুল্কভার ভাগাভাগির সমঝোতা বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তারা কোনো ধরনের মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
তবে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্কভার সমঝোতা অনুযায়ী পোশাক প্রস্তুতকারকের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে সমঝোতা না হলে চলমান ক্রয়াদেশ জাহাজীকরণ অনুমোদন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। অন্যদিকে ভবিষ্যৎ ক্রয়াদেশের ক্ষেত্রে মূল্য কমানোর চাপের পাশাপাশি চুক্তি চূড়ান্ত করার আলোচনায় অগ্রসর হওয়া যাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা
‘আলোচনা আছে, পদক্ষেপ নেই’-এটি দৈনিক আজকের প্রত্রিকার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সক্ষম সদস্যদের সরকারি ও আধা সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু কীভাবে তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, সেই পদক্ষেপ নেয়নি তারা।
অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের চাকরিতে অগ্রাধিকারের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এখনো কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের মধ্যে এর বাস্তবায়ন হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সরকারি চাকরিতে কাউকে অগ্রাধিকার দিতে হলে আইনি কাঠামোর মধ্য দিয়েই তা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইন, বিধি, পরিপত্র বা প্রজ্ঞাপন জারি না করে কাউকেই এই সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই। সরকার সেই পথে না গেলে অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের জন্য চাকরিতে কোটা চালু করতে হবে।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া মনে করেন, গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার দিতে গেলে আলাদাভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিয়োগবিধি সংশোধন করতে হবে।
ফিরোজ মিয়া বলেন, সরকারি দপ্তরগুলোতে আলাদা আলাদা নিয়োগবিধি। ফলে কোনো দপ্তরে কাউকে নিয়োগে অগ্রাধিকার দিতে গেলে সংশ্লিষ্ট বিধি পরিবর্তন করতে হবে। কারণ প্রজ্ঞাপন দিয়ে বিধি পরিবর্তন করা যাবে না। একটি আদেশের বলে তাঁদের চাকরিতে অগ্রাধিকার দিলে ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠবে।
দেশ রূপান্তর
‘মে-জুনে রাজপথ দখলের টার্গেট আ.লীগের!’-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তবে তিনি প্রকাশ্যে না এলেও দেশ অস্থিতিশীল করতে বিভিন্নভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে রাজপথে নামার ছকও তৈরি হয়েছে। আগামী মে ও জুনকে টার্গেট করে রাজপথ দখলের পরিকল্পনা করেছেন আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ তাদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। নির্দেশনা অনুযায়ী দেশব্যাপী ঝটিকা মিছিল বের করছেন তারা।
দেশ অস্থিতিশীল করার ঝটিকা মিছিল রুখতে তৎপর রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যমতে, গত তিন দিনে সারা দেশ থেকে ৪ হাজার ৭৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার তিন ভাগের দুই ভাগই আওয়ামী লীগের সদস্য। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি মাঠে থাকছেন ছাত্ররাও। তবে নিষিদ্ধ সংগঠনের এমন ঝটিকা মিছিল নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের মিছিল কন্ট্রোল করতে না পারলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
গতকাল সোমবার বিকেলে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শনিবার রাতে চার ঘণ্টাব্যাপী ‘ধানমন্ডি বত্রিশ’ টেলিগ্রাম গ্রুপে গাজীপুরের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও থানার নেতাকর্মীদের সঙ্গে জুম মিটিং করেন। তিনি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপাতত ফান্ডের সমস্যা’। বিদেশ থেকে কেউ টাকা পাঠাতে পারছে না। তাই প্রতি জেলায় ঝটিকা মিছিল দিয়ে শুরু করতে হবে। এই মিছিলে থাকবে স্থানীয় ওয়ার্ড বা ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মীরা।
এ ছাড়া নির্দেশ রয়েছে, রিকশা, অটোচালক এবং বাসের হেলপারের ছদ্মবেশে ঝটিকা মিছিলে অংশ নিতে। প্রয়োজনে আত্মরক্ষার্থে ইলেকট্রিক শক ডিভাইস ও ক্ষুদ্র জিনিসপত্র রাখতে হবে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়, নিম্নপর্যায়ের নেতাকর্মীরা যারা বিদেশে আছেন, তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হবে। যদি এক হাজার নেতাকর্মী আসেন, প্রয়োজনে ২০০ গ্রেপ্তার হলেও রিজার্ভে থাকবেন ৮০০। ৬৩ জেলায় অন্তত ১৫ লাখ লোককে জমায়েতের পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। মে ও জুন মাসের মধ্যেই তারা বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করেছে। যেখানে ব্যাপক রক্তক্ষয়ী সংঘাতের আশঙ্কাও রয়েছে।
ইতিমধ্যে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের ঝটিকা মিছিল বের করার ঘটনা বেড়েই চলেছে। গত এক সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অর্ধশত ঝটিকা মিছিল হয়েছে। সারা দেশে জেলা, থানা ও ওয়ার্ডপর্যায়ে দলীয় নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল বের করছেন। এসব মিছিলে ফটোসেশন করা হচ্ছে।