বাংলারজমিন
দিরাইয়ে হাওর রক্ষা বাঁধের জিও টেক্সটাইল ফেব্রিক্স লোপাট
দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
১৬ মে ২০২৫, শুক্রবারসুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উদগল বিল হাওর উপ-প্রকল্পের ৯৫ ও ৯৬ নম্বর প্রকল্পের জিও টেক্সটাইল ফেব্রিক্স লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির লোকরাই দিনে-দুপুরে এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এ ছাড়া, পার্শ্ববর্তী ৯৪ নম্বর প্রকল্পের জিও টেক্সটাইল ফেব্রিক্স রাতের অন্ধকারে চুরি হয়েছে বলে জানান তারা। জানা গেছে, অকাল বন্যার হাত থেকে হাওরের ফসল রক্ষায় ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে দিরাই উপজেলায় ১৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০২টি ডুবন্ত বাঁধের ভাঙন বন্ধ ও মেরামত কাজ সম্পন্ন করে বাপাউবো। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে আলাদা বরাদ্দে জিও টেক্সটাইল ফেব্রিক্স দিয়ে কার্পেটিং করা হয়। এ প্রক্রিয়াকে বাঁধ রক্ষায় সুরক্ষা কবচ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সরজমিন দেখা যায়, উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নের খাড়ারপাড় গ্রামের পাশে মাছুয়াখাড়া নামক হাওর রক্ষা বাঁধটির অবস্থান। দু’টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে বাঁধের কাজ সম্পন্ন করা হয়। জিও টেক্সটাইল ফেব্রিক্স দিয়ে কার্পেটিংয়ের মাধ্যমে বাঁধটি ঝুঁকিমুক্ত করতে বরাদ্দ দেয়া হয় সাড়ে ৬ লাখ টাকা।
স্থানীয়রা জানান, শুধু হাওর রক্ষা নয়, মাছুয়াখাড়া বাঁধ দিয়ে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের লোকজন স্থানীয় টেলিফোন বাজারসহ উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন।
জিও টেক্সটাইল ফেব্রিক্স এভাবে লোপাট না হলে এটি স্থায়ী হতো। বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া তারা চলাচল করতে পারতেন। প্রতি বছরই এমন ঘটনা ঘটে বলেও জানান তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, পিআইসি’র লোক ও তাদের নিযুক্ত পাহারাদার কার্পেটিং তুলে নিয়ে গেছে। জানতে চাইলে ৯৫ নম্বর পিআইসি’র সদস্য সচিব গোলাপ মিয়া বলেন, এ বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারবো না। পরে বলবো বলেই মোবাইলের সংযোগ কেটে দেন। ৯৬ নম্বর পিআইসি’র সভাপতি মস্তফা বলেন, একজন মহিলার কাছ থেকে খবর পেয়ে দৌড়ে বাঁধে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি গ্রামের লোকজন কার্পেট উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কারা নিয়েছে জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর না দিয়ে পরে বলবেন বলে জানান।
৯ নম্বর পিআইসি’র সভাপতি আজিজুল ইসলামের ছেলে মুক্তার হোসেন বলেন, এই বাঁধ দিয়ে আমাদের গ্রামের লোকজন চলাচল করে। আমরা ইউএনওকে অনুরোধ করে জিও টেক্সটাইল ফেব্রিক্স দিয়ে কার্পেটিং করি। যাতে স্থায়ী হয়। রাতের অন্ধকারে কারা যেন বেশির ভাগ জিও টেক্সটাইল ফেব্রিক্স চুরি করে নিয়ে গেছে। পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী এটিএম মোনায়েম বলেন, ৯৪ নম্বর প্রকল্পে জিও টেক্সটাইল ফেব্রিক্স বরাদ্দ ছিল না। বিশেষ প্রয়োজন দেয়া হয়েছে। মেজারমেন্ট করে বিল দেয়ার কথা ছিল। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সনজীব সরকার বলেন, এসব বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। নোটিশ জবাব পাওয়ার পর এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।