ঢাকা, ৫ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৭ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

বাজেটের কড়া সমালোচনা টিআইবি’র

রাষ্ট্র সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যের বিপরীতে চলছে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার
৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার
mzamin

২০২৫-২৬ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সংস্থাটি। টিআইবি বলছে, সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও রাষ্ট্র সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যের বিপরীতে চলছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাজেটের বিষয়ে এ প্রতিক্রিয়া জানায় টিআইবি। সংস্থাটি অন্তর্বর্তী সরকারের এ উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করে বলেছে, বিষয়টিকে রাষ্ট্রীয় সংস্কার, বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েছে সরকার। এ সিদ্ধান্ত একই সঙ্গে অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও সংবিধান পরিপন্থি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, রাষ্ট্র সংস্কার-বিশেষ করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যকে রীতিমতো উপেক্ষা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একইসঙ্গে, দুর্নীতিকে উৎসাহ দিয়ে রিয়েল এস্টেট লবির ক্ষমতার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। করহার যা-ই হোক না কেন, এটি সংবিধানের ২০ (২) অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যেখানে বলা হয়েছে রাষ্ট্র এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে যে, অনুপার্জিত আয় অবৈধ হবে। কালোটাকা সাদা করার সুযোগ একইসঙ্গে বৈষম্যমূলক, কারণ এই সিদ্ধান্তের ফলে আবাসন খাতে অবৈধ অর্থের মালিকদের অধিকতর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সৎ উপার্জনকারীদের ফ্ল্যাট বা ভবনের অংশীদার হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে। টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, সবচেয়ে আশঙ্কা ও হতাশার ব্যাপার হলো, সরকারের এই সিদ্ধান্ত দুর্নীতিকে উৎসাহ দেবে। এর মাধ্যমে সরকার বাস্তবে পুরো বছর জুড়ে অবৈধ ও অপ্রদর্শিত অর্থ-সম্পদ অর্জনের জন্য নাগরিকদের উৎসাহিত করছে এবং বছর শেষে কালোটাকাকে বৈধতা দেয়ার অঙ্গীকার করছে। বৈধতা দেয়ার অজুহাত হিসেবে যে খাতের তোষণ করা হচ্ছে, সেই আবাসন খাতই দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাতের একটি হিসেবে চিহ্নিত। অবিলম্বে কালোটাকা সাদা করার এই দুর্নীতিবান্ধব সুযোগ চিরতরে বাতিল করার জোর দাবি জানাই আমরা।

টিআইবি নির্বাহী বলেন, সরকারের কাছে এ বাজেটে প্রত্যাশা ছিল, দেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারে কতোটা অগ্রগতি হলো তার একটি ধারণা দেয়া হবে। কিন্তু সে ব্যাপারে মাত্র একটি বাক্য ব্যবহার করেই দায় সেরেছেন অর্থ উপদেষ্টা। অর্থ সম্পদ পাচার করেছেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন, এমন ব্যক্তিদের অর্থ-সম্পদের ওপর কর ও জরিমানা আরোপের বিধান করা হয়েছে। কিন্তু কী প্রক্রিয়ায় তা বাস্তবায়ন করা হবে- তাও পরিষ্কার করা হয়নি। এর বাইরে রাজস্ব আদায় বাড়াতে এর ব্যবস্থাপনা থেকে নীতিকে আলাদা করার সঙ্গে এ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের কৌশলগুলো কী হবে- সে উত্তরও পাওয়া যায়নি বাজেট বক্তৃতায়, যা সত্যিই হতাশার বলে মনে করে টিআইবি।

 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status