বাংলারজমিন
ঝিনাইদহে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাইবার দুর্বৃত্তদের রোষানলে বহু পরিবার
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
৪ জুন ২০২৫, বুধবার
ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সাইবার দুর্বৃত্তদের ক্রমাগত মিথ্যাচারে বহু অভিজাত পরিবার চরম ভোগান্তির মধ্যে জীবনযাপন করছে। সাইবার দুর্বৃত্তদের দাবিকৃত চাঁদার অর্থ প্রদান না করায় ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে মাদক ব্যবসার মতো অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে ঝিনাইদহের বহু পরিবারের বিরুদ্ধে প্রপাগন্ডা চালাচ্ছে সাইবার দুর্বৃত্ত জনৈক সৈয়দ আশিকুজ্জামান জনি ও সাবিদ কাওসার। এই সাইবার দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে এমন এক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়াম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চাপড়ী গ্রামের ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামের ছেলে সাঈদ হাসান মনিরুল। এ সময় পরিবারটির বৃদ্ধ মা রাজিয়া খাতুন, মমতাজ বেগম, সুমন আহম্মেদ, ফরহাদ, মাহাবুল আলম ও আল-আমিন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ২৬ মে ও ২ জুন অগ্রযাত্রা এক্সক্লুসিভ নামে একটি ফেসবুক পেজে ‘ঝিনাইদহসহ চার জেলার গডফাদার মনিরুলের জমজমাট মাদক কারবার’ হেডলাইন দিয়ে ভুয়া, মিথ্যা ও অসত্য সংবাদ প্রচার করা হয়। এই খবরে তার প্রবাসী ভাই এবং অসুস্থ মাকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। তার ভাই উজ্জল দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে প্রবাসে থাকলেও তিনি ক্সবাজারে থেকে মাদকের চালান পরিচালনা করছেন বলে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মনগড়া সংবাদ তৈরি করে অপপ্রচার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি ও আভিজাত্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে ও সর্বশেষ মনিরুলের চাচাতো ভাই ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচন করার ঘোষণা দেওয়ায় এলাকার কিছু কুচক্রী মহল মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ক্যাডার আশিকুজ্জামান জনি ও সাবিদ কাওসার নামে দুই সাইবার দুর্বৃত্তকে দিয়ে এমন মনগড়া অসত্য সংবাদ অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ যে সংবাদ প্রচার চালাচ্ছে সেখানে আমার নামে বাংলাদেশের কোথাও কোন থানায় মাদক মামলা আছে বা মাদক বিক্রি করছি অথবা মাদক সেবন করছি তেমন কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে সাঈদ হাসান মনিরুল লিখিত বক্তব্যে আরো জানান, গত প্রায় ছয় বছর আগে তার পিতা অসুস্থ থাকার কারণে এলাকার আব্দুল মালেক মন্ডল নামে এক সুদে কারবারির কাছ থেকে শর্ত সাপেক্ষে দুই লাখ পয়ত্রিশ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। টাকা গ্রহণের পর জামানত স্বরুপ মালেক মন্ডল তার কাছ থেকে সোনালী ব্যাংক, মধুপুর বাজার শাখা, ঝিনাইদহের চারটি চেক নিয়ে রাখেন।
আব্দুল মালেক মন্ডলের প্রায় সব টাকা পরিশোধ করার পরও জমা রাখা চেক ফেরত না দিয়ে হারিয়ে গিয়েছে বলে পরবর্তীতে সেই চেক দিয়ে আদালতে মোট দুই কোটি ১৮ লাখ ৬০ টাকার মামলা করেন, যার কোন ভিত্তি নেই। দুই কোটি ১৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা কোথা থেকে কোন ব্যাংক থেকে আমাকে দিলো তার কোন প্রমাণন সে দেখাতে পারি নাই। আগামী ইউপি পরিষদ নির্বাচনে তার এক ভাই স্থানীয় পোড়াহাটী ইউনিয়নের নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে প্রতিপক্ষরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং মিথ্যাচারের মাধ্যমে ফেসবুকে নানা রকম বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করতে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, আমরা বিএনপি পরিবারের সদস্য হিসেবে ১৬ বছর চরম নির্যাতিত। ঝিনাইদহবাসী জানেন আশিকুজ্জামান জনি ও সাবিদ কাওসার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের চিহ্নিত সাইবার দুর্বৃত্ত। ঢাকায় পড়ালেখা করার সুবাদে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ক্যাডার ও মাদক ব্যবসায়ী ছিল জনি ও সাবিদ। এরমধ্যে জনি মাগুরা ও ফরিদপুরে ফেনসিডিলসহ ধরা পড়ে জেলও খেটেছে এবং তার নামে মাদক মামলা এখনো চলমান। এখন সেই আবার আমাদের মতো একটি সম্মানিত পরিবারকে মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছে। এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। সেই সাথে এই সংবাদের সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।