দেশ বিদেশ
বাজেট বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব নয়: এফআইসিসিআই
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৫ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবারকিছু নীতি সংস্কারের পদক্ষেপ থাকলেও সার্বিক নীতির ধারাবাহিকতা না থাকায় ঘোষিত বাজেট বিনিয়োগবান্ধব নয়। একদিকে কিছু কর বা নীতি ছাড় দেয়া হলেও অন্য কিছু কর বা নীতি জটিলতায় তার সুফল মিলবে না। ফলে সরকার যখন বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে চাইছে, তখন এমন নীতি-বিশৃঙ্খলার কারণে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম। বুধবার বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এমন মন্তব্য করেছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)। রাজধানীর গুলশানস্থ সংগঠনটির নিজস্ব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন এফআইসিসিআই সভাপতি এবং ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও এমডি জাভেদ আখতার, সাবেক দুই সভাপতি নাসের এজাজ বিজয় এবং রূপালী হক চৌধুরী। বাজেটের সংক্ষিপ্তসার উপস্থাপন করেন কর বিশেষজ্ঞ স্নেহাশীষ বড়ুয়া। এফআইসিসিআই সভাপতি জাভেদ আখতার বলেন, ‘এ বাজেট অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার বাজেট, প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে করা বাজেট নয়। এ বাজেট প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য না থাকায় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ নিয়ে আসবে না। বিনিয়োগ না আসলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। যথেষ্ট পদক্ষেপ না থাকায় মূল্যস্ফীতিও কমবে না’। তিনি আরও বলেন, ‘যারা দেশের আইন মেনে স্বচ্ছতার সঙ্গে সরকারকে বেশি রাজস্ব দিচ্ছে, সরকার তাদের ওপরই বেশি বেশি করভার চাপাচ্ছে।’ এফআইসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘লেনদেনে কর ১ শতাংশে উন্নীত করার ফলে যারা আইন মানে না, লেনদেনে স্বচ্ছতা রাখে না, তারা বিক্রি কম দেখাবে। ফলে বাড়তি রাজস্ব আদায়ের চাপ আসবে, সেই বিদেশি কোম্পানিগুলোর ওপর যারা কর দেয়।’ সরকারকে করজাল বাড়িয়ে রাজস্ব আদায়ের দিকে জোর দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বার্জার পেইন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী হক চৌধুরী বলেন, ‘ছোটো-খাটো পরিবর্তন করে সরকারের কতোটা আয় বাড়ছে জানি না, তবে অনেক শিল্পের ক্ষতি হচ্ছে। নীতির ধারাবাহিকতা নেই।’ স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এমডি নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘গত বছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৯ শতাংশ বাড়িয়ে আগামী অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও বাস্তব আয়ের তুলনায় রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ শতাংশ। বাড়তি কর চাপ বাড়বে, যারা কর দেয় তাদের ওপর।’ তিনি বলেন, ‘কর বাড়ালেই সরকারের রাজস্ব বাড়ে না। এর ভালো উদাহরণ বেভারেজ খাতে করারোপ করার পর থেকে গত কয়েক বছর ধরে এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় কমেছে।
শিশু খাদ্য ও বেভারেজ পণ্যের ওপর নতুন করে আমদানি কর ও শুল্ক বাড়ানো ঠিক হয়নি বলে মত দেন তিনি।’
বাজেট বিশ্লেষণে স্নেহাশীষ বড়ুয়া বলেন, ‘রাজনৈতিক যে কোনো পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি চাপে ফেলা হয় ব্যবসায়ীদের।’ তিনি বলেন, ‘‘বাজেট নীতি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটা ‘সিগন্যাল’। বিনিয়োগকারীদের কাছে যেন খারাপ ‘সিগন্যাল’ না যায়, সে চেষ্টা করা উচিত।’’