বাংলারজমিন
কুলাউড়ায় কোটি টাকার বালু হরিলুট
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কটারকোনা বাজার সংলগ্ন মনু নদীর বালুমহাল থেকে উত্তোলনকৃত বালু নিয়ে চলছে তেলেসমাতি। ইজারার মেয়াদ গত দেড় বছর আগে শেষ হলেও সরকারের রাজস্ব আয় ফাঁকি দিয়ে জমাটকৃত বালু রীতিমতো হরিলুট চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এতে প্রশাসনের তেমন কোনো নজরদারি নেই। জানা গেছে, মনুনদীর কটারকোনা বাজার সংলগ্ন বালুমহাল থেকে সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে। জেলা প্রশাসন থেকে ওই বালুমহাল ইজারা নেন পৃথিমপাশা ইউনিয়নের বাসিন্দা দীপক দে। তিনি নিয়ম বহির্ভুতভাবে মনুনদীর উপর নির্মিত কটারকোনা ব্রিজ ঘেঁষে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদী থেকে নদীর দু’পাশে বালু উত্তোলন করেন। অথচ ব্রিজের পাশে কটারকোনা বাজারসহ ইউনিয়ন ভূমি অফিস, একটি স্কুল ও কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তৎকালীন সময় ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে দিনরাত বালু উত্তোলন করে নদীর তীরবর্তী অন্তত ৮-৯টি স্থানে বিপুল পরিমাণ বালু জমাট করেন দীপক দে। ইজারার মেয়াদকালীন সময়ে উত্তোলনকৃত বালু পুরোটা তিনি বিক্রি করেননি। যদিও সরকারি নিয়ম রয়েছে ইজারার নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে উত্তোলনকৃত রাখা বালু বিক্রি কিংবা সরিয়ে না নিলে ওই বালু সরকার পরবর্তীতে নিলামে বিক্রি করতে পারবে। কিন্তু তৎকালীন ইজারাদার দীপক দে সরকারি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একটি মহলকে ম্যানেজ করে গত দেড় বছর ধরে অবৈধভাবে ওই বালু বিক্রি করে আসছেন এমনটি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানান, তৎকালীন ইজারাদার দীপক দে’র ইজারার মেয়াদ গত দেড় বছর আগে শেষ হয়ে গেছে। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও তৎকালীন সময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের শীর্ষ কয়েকজন নেতার মদতে তিনি জমাটকৃত বালু অবৈধভাবে বিক্রি করে আসছেন। যা এখনো অব্যাহত আছে। সরজমিন দেখা গেছে, বালুমহালের তীর ঘেঁষে অন্তত ৭-৮টি পয়েন্টে স্টাইক করে রাখা হয়েছে বিশাল আকারের বালুর স্তূপ। সকাল থেকে রাত অবধি এসব পয়েন্টের বালু বড় বড় বাহনের মাধ্যমে নিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত দীপক দে’র সঙ্গে ইজারার মেয়াদ নিয়ে কথা বললে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর উত্তেজিত হয়ে যান এবং অশোভন আচরণ করেন। একপর্যায়ে এখনো তিনি কটারকোনা বালুমহালের ইজারাদার বলে দাবি করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, বালু নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সেই বালু নেয়ার কোনো বিধান নেই। সহকারী কমিশনার ভূমি ঘটনাস্থলে যাবেন। বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন আকারে জেলা প্রশাসক স্যারকে অবগত করবো। সিদ্ধান্ত নেবে জেলা প্রশাসন।