বাংলারজমিন
আমতলীতে ডেঙ্গু আতংকে ২০ গ্রামের মানুষ
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবারবর্তমানে আমতলী উপজেলায় ডেঙ্গুর ভয়াবহতা হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত ২৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে মোট ৯জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে উপজেলার চাওড়া, কুকুয়া, হলদিয়া, সদর ইউনিয়নের প্রায় ২০ গ্রামের ওপর দিয়ে ত্রিভুজ আকৃতির প্রভাবিত এ নদীর দৈর্ঘ্য ৩০ কিলোমিটার। ছাব্বিস কান্দা গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, সকাল-বিকাল মশার কামরে আমরা অতিষ্ঠ। চন্দ্রা গ্রামের সজিব মিয়া জানান, কচুরিপানার কারণে খালের পানি নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আবার মশার জ্বালা, ঘরে থাকতে পারছিনা। আমতলী সদর ইউনিয়নের মনির বলেন বলেন, আমাগো দিগে কেউ চায় না, একদিকে পচাঁ ওডা, অপরদিকে মশার অত্যাচার।
জানা যায়, রামনা বাঁধ নদীর মুখে সুবন্ধী পয়েন্ট, টিয়াখালী নদীর সঙ্গে জুলেখা পয়েন্ট, পায়রা নদীর সঙ্গে খুড়িয়াখেয়াঘাট ও নতুন বাজার বাঁধঘাট এপয়েন্টগুলোতে স্লইসগেট ও কালভার্ট রয়েছে। এগুলোতে সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ না করায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে নদীটি ছেয়ে গেছে কচুরিপানায়। বর্ষায় দুইকূল প্লাবিত হয়। শুকনো মৌসুমে ভালোভাবে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় এবং কচুরিপানায় ভরে থাকায় মশা আর মাছির কারখানায় পরিনত হয়েছে খালটি।
বসবাসরতরা জানান, মশা আর মাছির কারনে নদীপাড়ে যারা বস বাসকরেন তাদের প্রত্যেক পরিবারেই পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তার সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে ডেঙ্গু। বর্তমানে ডেঙ্গু নিয়ে চরম আতংকে রয়েছেন গ্রামগুলোর জনসাধারন। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আশির দশকে সুবন্ধী পয়েন্টে বাঁধ কাটা থাকায় রামনা বাঁধ নদীর সঙ্গে সংযোগ সুবিধা ছিল।নব্বইয়ের দশকে বাঁধটি পুনরায় দেওয়া হয়। ২-১ বছর পর স্থানীয় জনগণ আবার বাঁধটি কেটে দেয়। এভাবে ১৮ বছর খোলা থাকার পর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বাঁধটি আবার দেয়া হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসক ডা, চিন্ময় কুমার বলেন, মশা আর মাছিতে ডেঙ্গু, কলেরা আমাঁশাসহ পানিবাহিত রোগ ছড়িযে পড়তে পারে। জরুরীভাবে কচুরীপানা পরিস্কার করা প্রয়োজন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেকনুজ্জামান খান বলেন, জরুরীভাবে প্রয়োজণীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন কচুরীপনা স্থায়ীভাবে অপসারনের জন্য এই খালের তিরবর্তী হলদিয়া, চাওড়া, আমতলী সদর, কুকুয়ার শাখা খালগুলোতে খনন, কালভার্ট স্লুইজগেট নির্মানের কাজ চলমান রয়েছে। এই কাজগুলো শেষ হলেই কচুরী পানা অপসারন করা হবে। নদীর দুপাড়ের হাজার হাজার মানুষ দ্রুতগতিতে কচুরীপানা অপসারনের জন্য প্রশাসনের উচ্চমহলের কাছে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।