বিশ্বজমিন
ট্রাম্পের গ্রেপ্তারি হুমকির জবাবে মামদানি
ভয় দেখিয়ে থামানো যাবে না
মানবজমিন ডেস্ক
(১ দিন আগে) ২ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১১:০৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৭:৪৯ অপরাহ্ন

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদপ্রার্থী এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্রেট নেতা জাহরান মামদানি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের হুমকিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, আমি এই ভয়ভীতি মেনে নেব না। প্রসঙ্গত, ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন যে, নির্বাচিত হলে মামদানিকে গ্রেফতার করা হবে যদি তিনি নিউইয়র্কে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর কাজ বন্ধ করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। জাহরান মামদানি মঙ্গলবার ডেমোক্রেটিক পার্টির আনুষ্ঠানিক প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে ‘পাগল ও কমিউনিস্ট’ বলে কটাক্ষ করেন। গ্রেফতার ও নাগরিকত্ব বাতিলের হুমকি দেন।
মামদানি ১৯৯৮ সালে মাত্র সাত বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং ২০১৮ সালে নাগরিকত্ব লাভ করেন। তিনি বিবৃতিতে বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট আমাকে গ্রেফতার, নাগরিকত্ব বাতিল, বন্দিশিবিরে পাঠানো এবং দেশ থেকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছেন। এসব করেছেন শুধু এজন্য যে আমি আইসিই’কে আমাদের শহরে সন্ত্রাস চালাতে দেব না। এই বক্তব্য শুধু আমাদের গণতন্ত্রের ওপর আঘাত নয়, বরং প্রতিটি নিউইয়র্কারের জন্য একটি বার্তা- যদি তুমি মুখ খোল, তারা তোমার দিকেই আসবে। মামদানি আরও বলেন, ট্রাম্প যেভাবে বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের প্রশংসা করছেন, তা উদ্বেগজনক। যদিও অ্যাডামস ডেমোক্রেট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন, বর্তমানে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। এই মুহূর্তে যখন মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন বা মেগা রিপাবলিকানরা স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক নিরাপত্তা ধ্বংস করতে চায়, অ্যাডামস ট্রাম্পের বিভাজন ও ঘৃণার রাজনীতির প্রতিধ্বনি করছেন। যা নিউইয়র্কবাসী আগামী নভেম্বর মাসে জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করবে।
৩৩ বছর বয়সী মামদানি তার কার্যকর ও কৌশলী সামাজিক মিডিয়া ক্যাম্পেইনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। তার ভিডিও বার্তাগুলো লাখ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছেছে এবং তাকে এক ‘উদীয়মান সমাজতান্ত্রিক নেতা’ হিসেবে পরিচিত করেছে। মামদানি বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যাশা ভেঙে দিয়েছি। আমরা এমন ভোটারদের কাছে পৌঁছেছি, যাদের অনেকেই হারিয়ে গিয়েছিলেন। ওদিকে অভিবাসন সংক্রান্ত এক রাউন্ডটেবিল আলোচনায় ট্রাম্প বলেন, মামদানি হলো একজন ‘খাঁটি কমিউনিস্ট’ এবং ‘সম্পূর্ণ পাগল’। আমরা ওকে ধরে ফেলব। আমরা আমাদের দেশে এমন লোক চাই না। তাকে নজরদারির মধ্যে রাখব। অনেকে বলছেন সে অবৈধভাবে এখানে আছে। আমরা সব খতিয়ে দেখব। তিনি আরও বলেন, নিউইয়র্ক যেভাবে তিনগুণ অর্থ সহায়তা পাচ্ছে, অন্য কোনো রাজ্য তা পায় না। ফ্লোরিডা পায় এক-তৃতীয়াংশ। আর আমরা তাকে সেই টাকায় শহর চালাতে দিচ্ছি।
মামদানি উগান্ডায় জন্মগ্রহণ করেন দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এক পরিবারে। তিনি বর্তমানে নিউ ইয়র্ক রাজ্যের অ্যাসেম্বলি সদস্য। নির্বাচিত হলে তিনি হবেন নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র। তবে মামদানির নাগরিকত্ব নিয়ে রিপাবলিকানদের একটি অংশ সন্দেহ উত্থাপন করেছে, যেহেতু তিনি মাত্র ২০১৮ সালে নাগরিকত্ব পেয়েছেন। নভেম্বরের নির্বাচনের আগেই মামদানির প্রচারাভিযান এখন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
এই হুমকি ও পাল্টা জবাব হয়তো ২০২৫ সালের নিউইয়র্ক সিটি নির্বাচনের গতিপথই বদলে দিতে পারে।
পাঠকের মতামত
অপ্রিয় হলেও সত্যি ,ক্ষমতা ব্যাবহার করে প্রতিপক্ষকে দমানো এখন শুধু অনুন্নত বিশ্বের অসভ্য সংস্কৃতি নয় এটা এখন সভ্যতার দাবীদারদেরও নগ্ন প্রকাশ্য হাতিয়ার ।
গনতন্ত্রের কথা বলে ক্ষমতায় এসেছেন ট্রাম্প। এখন অগণতান্ত্রিক কথা বলে বিভিন্নভাবে মামাদানিকে হুমকি দিচ্ছেন।