বিশ্বজমিন
দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে বড় হুমকির মুখে ইসরাইলের অর্থনীতি
মানবজমিন ডেস্ক
(৯ ঘন্টা আগে) ৩ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৬:২০ অপরাহ্ন

নতুন এক মাত্রায় পৌঁছেছে ইরান-ইসরাইল সংঘাত। এখন যুদ্ধের প্রধান ক্ষেত্র শুধু অস্ত্রে নয়, অর্থনীতিও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। সামরিক হামলার পাশাপাশি ইরান এবার সরাসরি ইসরাইলের আর্থিক অবকাঠামোতে আঘাত হেনেছে। জুনে ইসরাইলের বন্ড করপোরেশনের প্রধান দানি নাভেহের বাসভবনে আঘাত হেনেছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র। বলে রাখা ভালো ওই করপোরেশনটির মাধ্যমে গত কয়েক মাসে প্রবাসী ইহুদি ও বিভিন্ন সরকারি উৎস থেকে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছে দানি। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বিনিয়োগকারীদের আস্থায়ও বড় আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
এছাড়া ইসরাইলের প্রধান বন্দর হাইফায় হামলা ও মায়ার্সক- এর জাহাজ চলাচল স্থগিত করে দেওয়া ইসরাইলের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা বলে বিবেচিত হচ্ছে। বন্দরটি বন্ধ হওয়ায় আমদানি ঘাটতি ও জ্বালানি সংকটের সম্ভাবনা স্পষ্ট হয়েছে। এছাড়া বীমা খরচ বেড়ে যাওয়ায় দেশটি কার্যত বাণিজ্যিকভাবে একঘরে হয়ে পড়তে পারে।
মিডলইস্ট আইয়ের অর্থনীতি বিষয়ক বিশ্লেষক আহমেদ আলকারারৌত তার এক প্রতিবেদনে বলেছেন, ইরানের এই আক্রমণ কৌশলগত ও সাশ্রয়ী। মাত্র ২-৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে তারা ইসরাইলের ওপর বিপুল চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে, ইসরাইলের যুদ্ধ খরচ আকাশচুম্বী। কমছে মুদ্রার মান, আর বেড়েছে বন্ডের সুদহার। বিনিয়োগও নিম্নমুখী। যা জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। এখন জার্মানি, ফ্রান্স ও উপসাগরীয় দেশগুলোর কাছে অর্থ সাহায্য চাইছে ইসরাইল। যা নজিরবিহীন ঘটনা। এমন যুদ্ধব্যায় দেশটির অর্থনীতিতে কতটা গভীর চাপ তৈরি করেছে তারই বড় প্রমাণ।
এ সুযোগে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন কৌশল নিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। একদিকে ইরানের চীনমুখী রেলযোগাযোগে হস্তক্ষেপ, অন্যদিকে সিরিয়া-লেবাননে উন্নয়ন সহায়তার মাধ্যমে ইরানের প্রভাব কমানোর চেষ্টা করছে ওয়াশিংটন। সব মিলিয়ে, যুদ্ধবিরতি কেবল সময়ক্ষেপণ বলে মনে করেন আহমেদ। তিনি বলেন, ইরান কৌশলে এগিয়ে গেছে, আর অর্থনৈতিকভাবে চাপে পড়েছে ইসরাইল। এখন এই শূন্যতা ব্যবহার করে অঞ্চলটিতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বাড়াতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।