বিশ্বজমিন
কাতারে যুদ্ধবিরতির আলোচনা
গাজায় বোমা হামলায় নিহত আরও ৭৮
মানবজমিন ডেস্ক
(১১ ঘন্টা আগে) ৬ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ৯:২১ পূর্বাহ্ন

গাজায় অব্যাহতভাবে বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে ইসরাইল। এতে গত ২৪ ঘন্টায় সেখানে কমপক্ষে ৭৮ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে কাতারে চলছে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা। এরই মধ্যে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় ঘোষণা দিয়েছে যে, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য একটি আলোচক দল কাতারে পাঠানো হবে। নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী আলোচকদের কাতারের রাজধানী দোহায় যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং আন্তরিকভাবে আলোচনা করতে বলেছেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, হামাস যে পরিবর্তনগুলো কাতার প্রস্তাবে আনতে চায়, তা গতরাতে জানানো হয়েছে এবং সেগুলো ইসরাইলের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এসব পরিবর্তনের বিস্তারিত জানানো হয়নি।
হামাস জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গঠিত একটি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে, যার আওতায় গাজায় ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি হতে পারে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলের আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৭,৩৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও কমপক্ষে ১,৩৫,৯৫৭ জন আহত হয়েছে। গাজা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে, খাদ্য ও ওষুধ সংকটে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, এবং দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। হামাসের অবস্থান হলো, যে কোনো যুদ্ধবিরতির শর্তে ইসরাইলকে স্থায়ীভাবে আগ্রাসন বন্ধের নিশ্চয়তা দিতে হবে।
হামাস জানিয়েছে, তারা পূর্ণ প্রস্তুত ও আন্তরিকতার সঙ্গে অবিলম্বে নতুন আলোচনায় অংশ নিতে ইচ্ছুক। জর্ডানের আম্মান থেকে আল জাজিরার হামদা সালহুত জানিয়েছেন, হামাস প্রস্তাবে তিনটি প্রধান সংশোধনের দাবি জানিয়েছে।
১. যুদ্ধবিরতির ৬০ দিন শেষ হলেও, শান্তি আলোচনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
২. গাজায় ত্রাণ সরবরাহ জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হতে হবে, মার্কিন-ইসরাইল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন নয়।
৩. ইসরাইলি বাহিনী গাজার কোথায় অবস্থান করবে, সেটিও চুক্তির অংশ হতে হবে।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় যখন আলোচনার ঘোষণা দেয়, তখন তেলআবিব, জেরুজালেম ও হাইফায় ইসরাইলি বন্দিদের পরিবার ও সমর্থকরা বিক্ষোভ করছিলেন। ৭ অক্টোবরের হামাসের আক্রমণে অপহৃত প্রায় ২০০ জনের মধ্যে এখনও প্রায় ৫০ জন গাজায় বন্দি, যাদের মধ্যে অন্তত ২৭ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করছে ইসরাইল। বন্দিদের পরিবারগুলোর অভিযোগ, নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক স্বার্থে চুক্তি আটকে দিচ্ছেন। তারা বলছেন, নেতানিয়াহুর কট্টর ডানপন্থী রাজনৈতিক সঙ্গীরা কোনো চুক্তি চান না। ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ও কট্টর ডানপন্থী নেতা ইতামার বেন-গভির বলেছেন, এই পথ আত্মসমর্পণের পথ এবং যে কোনো যুদ্ধবিরতি, বন্দিমুক্তি বা হামাসকে সাহায্য করাকে সন্ত্রাসের পুরস্কার হিসেবে দেখা হবে। তার মতে, গাজা দখলের মাধ্যমে পুরোপুরি জয় অর্জন এবং মানবিক সহায়তা বন্ধ করে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বাধ্যতামূলক দেশান্তরই ইসরাইলের কৌশল হওয়া উচিত।