ঢাকা, ২৬ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫ রমজান ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

সিলেটে সিএনজি পাম্পে গ্যাস সংকট

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
৩১ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবারmzamin

লোড লিমিট থাকার কারণে সিলেটে সিএনজি পেট্রোল পাম্পে গ্যাস সংকট চলছে। বিশেষ করে প্রতি মাসের শেষ ১০ দিন এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। সিএনজি পাম্প বন্ধ রেখে সংকট মোকাবিলা করতে হয় সিএনজি পেট্রোলপাম্প মালিকদের। এই অবস্থায় সিলেটে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। দিনের অর্ধেক অংশ লাইনে দাঁড়িয়েও তারা গ্যাস পান না। পাম্প মালিকরা জানিয়েছেন; প্রায় দেড় যুগ আগে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চাপ নির্ণয় করে লোড নির্ধারণ করা হয়েছিলো। এখন সড়কে গাড়ি বেড়েছে কয়েকগুণ। লোড না বাড়ানোর কারণে মাসের শেষ ১০ দিন চাহিদামতো গ্যাস সরবরাহ করতে পারেন না বলে জানান সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিকরা। লোড সংকটের কারণে নগর জুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। এদিকে লোড বাড়ানোর জন্য বারবার গ্যাস বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ও মৌখিক আবেদন জানালেও কোনো কাজ হয়নি। বরং দিনকে দিন সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিকরা কঠোর আন্দোলনের চিন্তা-ভাবনা করছেন। তারা জানিয়েছেন- নতুন করে লোড নির্ধারণ করলে সংকট কেটে যাবে। মালিকরা জানান, ২০০৭ সাল থেকে সিলেটে সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে পরিবহনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে সিলেট বিভাগে রয়েছে ৩৬টি ফিলিং স্টেশন। গত এক দশক ধরে নতুন কোনো পাম্পের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না। 

মালিকরা জানান, বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ প্রতি ফিলিং স্টেশনের মালিকদের জন্য লোড নির্ধারণ করে দিয়েছে। এর বাইরে যেসব পাম্প গ্যাস বিক্রি করেন তাদের জরিমানার মুখে পড়তে হয়। গত কয়েকদিন নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে; বিভিন্ন সিএনজি ফিলিং স্টেশনে দীর্ঘ গাড়ির লাইন। সোমবার নগরীর ইউসুফ আলী সিএনজি ফিলিং স্টেশন, আর রহমান ফিলিং স্টেশন, আল জালালা ফিলিং স্টেশন, কুশিয়ারা ফিলিং স্টেশন বন্ধ থাকার কারণে গ্যাসে তীব্র সংকট দেখা দেয়। যে কয়েকটা সিএনজি ফিলিং স্টেশন খোলা রয়েছে সেখানে দেখা গেছে, প্রায় ১ কিলোমিটার জুড়ে গাড়ির দীর্ঘ লাইন। সপ্তাহের প্রথম দিকে বন্ধ ছিল সিলেট নগরীর আম্বরখানা জালালাবাদ সিএনজি ফিলিং স্টেশন, টুকেরবাজার ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিলিং স্টেশন, আখালালি শাহজালাল ফিলিং স্টেশন, তেমুখী সফাতউল্লাহ ফিলিং স্টেশন। সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকরা জানান- প্রতি মাসের শেষদিকে এসে সিলেটে গ্যাসের সংকট হয়। গাড়ির চালকসহ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। তারা বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে গ্যাস নিতে হয়। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের দাবি সিলেটে যেন গ্যাস সংকটের সমাধান করেন। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস, ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোলপাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের বিভাগীয় সভাপতি জুবায়ের আহমদ চৌধুরী গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- প্রতি মাসে ১ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত কোনো সংকট থাকে না। শেষ ১০ দিন সংকট তীব্র হয়। আজ থেকে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন- গ্যাস বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য জালালাবাদ গ্যাসের কাছে বারবার চিঠি দেয়া হয়েছে। বৈঠকও করা হয়েছে। জাতীয় সংকটের দোহাই দিয়ে তারা বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। দেশের প্রায় ৭০ ভাগ গ্যাস সিলেট থেকে গ্রিডে সংযোজন হচ্ছে। কিন্তু সিলেটে গ্যাস সংকটে সিএনজি পাম্পগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে যা খুবই দুঃখজনক। পাম্পগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি। গতকাল সন্ধ্যায় পাম্প মালিকরা জানিয়েছেন- বুধবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ গ্যাস থেকে সংশ্লিষ্টরা এসে লোড দেখে গেছেন। ফলে আজ বিকাল থেকে নতুবা আগামীকাল সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে নভেম্বরেও শেষ ১০ দিন ভোগান্তি থাকবে বলে জানান তারা।  

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status