শেষের পাতা
সম্ভাবনাময় নতুন বাংলাদেশ শুরু হয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার, পাবনা থেকে
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, যুগের পর যুগ দেশে যে বৈষম্য তৈরি হয়েছিল, সেটা আমরা কয়েক মাসে ঠিক করে দেবো- এটা ভাবার সুযোগ নেই। তবে ’২৪-এর আন্দোলন বলে দিচ্ছে আপনারা পারেন। ’৯০-এর আন্দোলন বলে দেয় আপনারা পারবেন। অনেকে বলেছিল বাংলাদেশ টিকবে না। দেশের জনগণ দেখিয়ে দিয়েছেন সম্ভাবনাময় নতুন বাংলাদেশ শুরু হয়েছে।
গতকাল দুপুরে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ড. আলী রীয়াজ বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমরা সুন্দর পরিবেশ পেয়েছি। মেধা, পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার কারণে সবাইকে এখানে নিয়ে আসছে। অন্যদের সহযোগিতা ছাড়া এককভাবে সফলতা অর্জন সম্ভব নয়। পর্দার অন্তরালের লোকদের প্রতি মুহূর্তে স্মরণ করতে হবে। যাদের অবদানের কারণে এখানে আসছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা থাকতে হবে। আপনি যদি স্বীকার করতে না পারেন তাহলে ব্যক্তির সাফল্যের উদ্যাপন হবে। দেশের জন্য কোনো কাজে আসবে না।
তিনি বলেন, যদি অগ্রসর হতে চাই তাহলে সকলে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। আপনারা দেশের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারী। মেধা, শ্রম ও জ্ঞানের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে হবে। প্রতিযোগিতাই অনুপ্রাণিত করবে জ্ঞান অর্জনে। যে জ্ঞান কেবলমাত্র একক চিন্তায় আবদ্ধ করে সে জ্ঞান রাষ্ট্রচিন্তায় কোনো কাজে আসে না। নতুন নতুন জ্ঞান সংযুক্ত করতে হবে। নতুন কোনো চিন্তার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্বাবন করবেন যেটি দেশের পরিবেশ চায় কিনা সেটা খেয়াল রাখতে হবে। পরিবেশকে রক্ষা করে না এমন বিজ্ঞান-প্রযুক্তি মানুষের জন্য উপযুক্ত নয়। প্রাণ ও প্রকৃতিকে রক্ষা না করতে পারলে বাংলাদেশ রক্ষা হবে না।
তিনি আরও বলেন, তোমাদের মধ্যে যে জ্ঞানের চর্চা করবে সেটার সহমর্মিতা থাকতে হবে। সুবিধা বঞ্চিতদের জন্য সহমর্মিতাবোধ থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা হলো মুক্ত চিন্তার শিক্ষা। আপনারা জ্ঞানের চর্চা করবেন। সেটা যেভাবেই হোক। পত্রিকার খবর পড়বেন, আর্টিকেল পড়বেন, সবই জ্ঞান চার্চার মাধ্যম। সমাজের সবার থেকে শিক্ষা নিতে হবে। যিনি কোনো মহাবিদ্যালয় থেকে শিক্ষাগ্রহণ করেননি তাদের থেকেও শিক্ষা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। এর আগে সকাল সাড়ে ১০ টায় কোরআন তিলাওয়াত ও জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে নিহতদের জন্য ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে নিহত ও আহতদের জন্য দোয়া করা হয়।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এসএম আব্দুল আওয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো. আনোয়ারুল আজিম আকন্দ, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. নকীব মুহাম্মদ নাসরুল্লাহ, রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. এসএম আব্দুর রাজ্জাকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পাবনায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।