অনলাইন
এক বছরে দ্বিগুণেরও বেশি সম্পদ বাড়লো ডনাল্ড ট্রাম্পের
মানবজমিন ডিজিটাল
(৪ দিন আগে) ৩ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১:১৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:৪২ পূর্বাহ্ন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০২৫ সালের ফোর্বস বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় ৭০০তম স্থান অর্জন করেছেন। একসময় ক্রমবর্ধমানভাবে আইনি ঝামেলা এবং আর্থিক বিপর্যয়ের সাথে লড়াই করে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হয়েছিলেন ট্রাম্প। মাত্র এক বছরে তা কাটিয়ে উঠে তার মোট সম্পদ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। ২.৩ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৫.১ বিলিয়ন ডলার।
৭৮ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান নেতা প্রথমবারের মতো ১৯৮২ সালে তার বাবা ফ্রেড ট্রাম্পের সাথে ফোর্বস ম্যাগাজিনে বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় প্রথম ৪০০-এর মধ্যে স্থান পান। সেইসময় সম্মিলিত আনুমানিক সম্পদের পরিমাণ ছিল ২০০ মিলিয়ন ডলার। তার সম্পদের মূলে ছিল রিয়েল এস্টেট। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রমবর্ধমান সুদের হার, অনলাইন কেনাকাটার দিকে মানুষের ঝোঁক বাড়া এবং অফিসের জায়গা কমে যাওয়ার কারণে এই খাতটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। গল্ফ কোর্স, বিলাসবহুল সম্পত্তি, একটি ওয়াইনারি এবং 'ট্রাম্প ফোর্স ওয়ান' নামে পরিচিত একটি বোয়িং ৭৫৭ এর মালিকানা থাকা সত্ত্বেও, ট্রাম্প গুরুতর আর্থিক চাপের সম্মুখীন হন। এর পাশাপাশি, বড় অঙ্কের ঋণ পেতে নিজের সম্পদ ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানোর অভিযোগে নিউ ইয়র্কের একটি আদালত ট্রাম্পকে ৪৫৪ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করে।
এক পর্যায়ে, নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস ট্রাম্পের ৪০ নম্বর ওয়াল স্ট্রিট ভবনসহ তার সম্পদ জব্দ করার ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। ট্রাম্প ১৭৫ মিলিয়ন ডলার বন্ডের বিনিময়ে আইন প্রয়োগ বিলম্বিত করতে সক্ষম হন। ট্রুথ সোশ্যালের মূল কোম্পানিকে জনসাধারণের কাছে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ট্রাম্প তার আর্থিক ধাক্কা সামলাতে সক্ষম হন। প্ল্যাটফর্মটির সামান্য আয় এবং উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সত্ত্বেও, বিনিয়োগকারীরা-যাদের অনেকেই ট্রাম্পের অনুগত- এর শেয়ারকে বিশাল উচ্চতায় নিয়ে গেছে। যদিও পরে শেয়ারের দাম ৭২ শতাংশ কমে গেছে, তবুও মার্চ পর্যন্ত ট্রাম্পের ২.৬ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার ছিল
সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরে, ট্রাম্প তার প্রভাবকে পুঁজি করে NFT (নন-ফাঞ্জিবল টোকেন) এবং কফি-টেবিল বই থেকে শুরু করে স্নিকার্স এবং বাইবেল পর্যন্ত সবকিছু বিক্রি করেছেন। কিন্তু ট্রাম্পের সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত সাফল্য এসেছে ক্রিপ্টোকারেন্সির দুনিয়া থেকে। গত বছরের শেষের দিকে তিনি ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফাইন্যান্সিয়াল নামে একটি ক্রিপ্টো প্রকল্প চালু করেন, যা নবীন বিনিয়োগকারীদের লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে সাড়া না মিললেও, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভের পর এই উদ্যোগটি বিকাশ লাভ করে। ক্রিপ্টো উদ্যোক্তা জাস্টিন সানের প্রচারণার ফলে ট্রাম্পের আনুমানিক ২৪৫ মিলিয়ন ডলার আয় হয়। এখানেই থেমে থাকেননি বিলিয়নিয়ার $TRUMP চালু করেন, এটি একটি ডিজিটাল টোকেন যা অনুমানমূলক বাণিজ্যকে পরিচালিত করতে পারে। আইনি জরিমানা হিসেবে ট্রাম্পের কাছ থেকে এখনও প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার পাওনা থাকা সত্ত্বেও, ট্রাম্পের এখন আনুমানিক ৮০০ মিলিয়ন ডলারের তরল সম্পদ রয়েছে।
ফোর্বস ২০২৫ সালের বিলিয়নিয়ার তালিকায় রেকর্ড ৩,০২৮ জন বিলিয়নিয়ার রয়েছেন যাদের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার। তালিকার শীর্ষে রয়েছেন ডনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ইলন মাস্ক, যার আনুমানিক সম্পদের পরিমাণ ৩৪২ বিলিয়ন ডলার। টেসলা এবং স্পেসএক্সের নেতৃত্বদানকারী মাস্ক বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে তার অবস্থান ধরে রেখেছেন।
সূত্র: এনডিটিভি