বিনোদন
ঈদে জমজমাট বছর জুড়ে খরা
ফয়সাল রাব্বিকীন
১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার
গত কয়েক বছর ধরে প্রতি ঈদেই সিনেমার কাটতি বেশ ভালো। বিশেষ করে বড় বাজেটের সিনেমাগুলো মুক্তি পায় এ সময়, যার কারণে দর্শকরাও ছুটির সময়ে কৌতূহলী হয়ে ওঠে সিনেমার প্রতি। গেল রোজার ঈদে ছয়টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। এরমধ্যে ‘বরবাদ’, ‘দাগি’, ‘জংলি’- তিনটি ছবিই সাফল্য দেখিয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানও ছবি তিনটির ব্যবসায়িক সফলতার ইঙ্গিত ইতিমধ্যে দিয়েছেন। অন্যদিকে ‘চক্কর’ ‘জিন-৩’ ছবি দু’টিও বেশ আলোচিত হয়েছে। তবে ঈদের সময় এমন চিত্র নতুন নয়। এটা কয়েক বছর ধরেই ঘটছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে- ঈদের সময় জমে উঠলেও বছর জুড়ে বাংলা সিনেমার দর্শক খরায় থাকে হলগুলো। যার কারণে সিনেপ্লেক্সগুলো বিদেশি সিনেমার ওপর নির্ভর থাকে। অন্যদিকে বছরের অন্য সময় অনেক সিঙ্গেল স্ক্রিনই বন্ধ থাকে। যেগুলো খোলা থাকে সেগুলোও কোনোরকমে চলে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- শুধুমাত্র ঈদের সিনেমা দিয়ে কি সারা বছরটাকে টানা সম্ভব? উত্তর হচ্ছে, অবশ্যই না। কোনো ভাবেই না। হল মালিকরাও তাই মনে করেন। সেটা মনে করেন পরিচালক থেকে শুরু করে শিল্পীরাও। কিন্তু ঈদের বাইরে দর্শক টানা সম্ভব হচ্ছে না কেন? উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, বড় বাজেট, তারকা ও আয়োজনের ছবি রোজার ঈদ ও কোরবানির ঈদের জন্য তুলে রাখা হয়। ঈদের বাইরে বড় ছবি মুক্তির সাহস পান না প্রযোজকরা। উদাহরণস্বরূপ গত বছরের শেষে মুক্তি পায় অনন্য মামুন পরিচালিত ও শাকিব খান অভিনীত সিনেমা ‘দরদ’। কিন্তু ঈদের বাইরে মুক্তি দিয়ে ছবিটি সাফল্য দেখাতে পারেনি। এর বাইরেও গত দুই বছরে যে সিনেমা ঈদের বাইরে মুক্তি দেয়া হয়েছে সেগুলোর ব্যবসায়িক অবস্থা সুখকর নয়। ঐতিহ্যবাহী মধুমিতা সিনেমা হলের কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, আমার মনে হয় ঈদে সব বড় ছবির ভিড় কমাতে হবে। যেমন এবার ঈদে যে ছবিগুলো মুক্তি পেয়েছে তার প্রায় সবই ভালো। কিন্তু আমাদের সিঙ্গেল স্ক্রিনে চালাতে হয় একটি ছবিই। আবার ভালো সব ছবি যদি ঈদেই মুক্তি পায়, বছর জুড়ে আমাদের খরার মধ্যে পার করতে হয়। যার জন্য মাঝেমধ্যেই হল বন্ধ পর্যন্ত রাখতে হয়। আমি মনে করি সিনেমার সার্বিক উন্নয়নের জন্য অবশ্যই ঈদের বাইরে বড় ছবিগুলো মুক্তি দিতে হবে। না হলে এ অবস্থা থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়। স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এবার ঈদে সিনেমা বেশ ভালো গেছে। প্রতি ঈদেই এমন চিত্র থাকে। তবে আমরা সারা বছর বাংলা সিনেমা চালাতে চাই। যদি ভাগ করে বড় ছবিগুলো বছরের বিভিন্ন সময় মুক্তি দেয়া হয় তবে সার্বিকভাবে চলচ্চিত্রের জন্যই ভালো।