ঢাকা, ১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

দাউদকান্দিতে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার
mzamin

দাউদকান্দি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নস্থ মুকুন্দি গ্রামে ১৯৯৬ সালে অর্থাৎ আজ থেকে ত্রিশ বছর পূর্বে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। পরে ২০১৫ সালে এসে এই ব্রিজটির দুটি অংশ ধসে পড়ে। তাছাড়া  ভেঙে পড়েছে ব্রিজের রেলিং। ফাটল ধরেছে তার পিলারেও। বিগত ১০ বছরেও এই বেহাল ব্রিজটির কোনো সংস্কারের কাজ করা হয়নি। তাতে করে ব্রিজটি যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রূপ ধারণ করেছে। এ সময়ের মধ্যে আর নতুন কোন ব্রিজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সে কারণে দৌলতপুর ইউনিয়নের ৬টি গ্রামের অগণিত মানুষ বেহাল ও ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করে আসছেন। তাতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা জাতীয় অঘটন ঘটে যেতে পারে। তথাপিও এ ভাঙা ব্রিজ দিয়েই দাউদকান্দি উপজেলাস্থ দৌলতপুর  ইউনিয়নের কাউয়াদি, ভবানীপুর, তুলাতলী, সাধারদিয়া, নতুনবাজারসহ ছয় গ্রামের বাসিন্দারা যাতায়াত করেন। ঝুঁকিযুক্ত এই ব্রিজটি দিয়েই আশেপাশের বেশ কয়েকটি স্কুল ও মাদ্রাসার অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীরা চলাচল করে আসছে। অন্য কোনো সুব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্রিজ দিয়েই জীবনের রিস্ক নিয়ে যাতায়াত করছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম জানান, ‘আমাদের গ্রামসহ আশেপাশের গ্রামে প্রাইমারি স্কুল, হাইস্কুল ও দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসাও রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শত শত ছাত্র-ছাত্রী প্রত্যহ এই ভাঙা সেতুটি দিয়েই তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে। এতে করে আমরা প্রতিদিন টেনশনে থাকি যে, কখন না জানি দুর্ঘটনা ঘটে যায়! তাই সেতুটির তাড়াতাড়ি সংস্কারের কাজ না করা হলে, বড় অঘটন ঘটে যেতে পারে’। মুকুন্দি গ্রামের একজন বলেন, ‘এই ভাঙা ব্রিজ দিয়ে কৃষকরা রিস্ক নিয়ে তাদের পণ্য হাট-বাজারে আনা-নেওয়া করে থাকেন। বর্তমানে এই ব্রিজটি দিয়ে হাঁটাও ঝুঁকিপূর্ণ। স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন নির্বাচনের সময়ে মেম্বার-চেয়ারম্যান প্রার্থীগণ এই ভাঙা ব্রিজটি সংস্কার বা নতুন করে র্র্নিমাণের আশ্বাস দিয়ে থাকেন। তবে এই পর্যন্ত কেউ সেই আশ্বাসের বাস্তবায়ন করেনি বিধায় আমাদের গ্রামসহ আশেপাশের ৬টি গ্রামে বসবাসকারীরা তাদের জীবনের রিস্ক নিয়ে যাতায়াত করে যাচ্ছেন।’ ভবানীপুর গ্রামে বসবাসকারী একজন জানান, বেহাল দশার আমাদের এই ব্রিজটি সংস্কার বা পুনরায় নতুন নির্মাণ না করায় ভীষণ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদেরকে। তাই আমাদের দাবী যে, যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্রিজটি যেন নতুন করে র্র্নিমাণ করে দেয়া হয়’। সাধারদিয়া গ্রামের ব্যাটারিচালিত একজন রিকশাচালক জানান, ‘এই সড়কে দিয়ে নিয়মিত যাত্রী বহন করে আমি আনা-নেওয়া করতাম। কিন্তু ব্রিজটি ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় এখন আর আমি তা করি না। কারণ, এই ব্রিজটি দিয়ে এখন আর গাড়ি চলাচল করতে পারে না। এতে করে যাত্রীদেরও বেড়েছে দুর্দশা’। স্থানীয় বাসিন্দা একজন কৃষক জানান, ‘সম্ভব ৩০ বছর আগে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু আজও পর্যন্ত আমাদের চলাচলের এই ব্রিজটির উন্নয়নমূলক কোন সংস্কারের কাজ আদৌ করেনি। ২০১৫ সালের দিকে ব্রিজটির ওপরের অংশের আস্তরণ খসে পড়া শুরু করে। পরে একবার গ্রামবাসী সকলে মিলে মসজিদের দানের টাকা দিয়ে সংস্কার কাজ করেছি।’ মাদ্রাসার এক শিক্ষকও জানান যে, ‘ব্রিজটি দিয়ে আমাদের আশেপাশের নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীরা যাতায়াত করে থাকে। তথাপিও ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ বেহাল দশা অবস্থায় পড়ে আছে। তাই আমরা বেহাল দশার রিস্কি এই ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করা ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে আতঙ্কে থাকি। কারণ, মনে হয় যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ এই রিস্কি ব্রিজটি যেন তাড়াতাড়ি পুনর্র্নিমাণ করে দেয়া হয়, সেজন্য  সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি।’ ঝুঁকিপূর্ণ আলোচিত এই ভাঙা ব্রিজটির ব্যাপারে দাউদকান্দি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার (এলজিইডি) মোহাম্মদ জাহিদ হাসান জানান, ‘এই ঝুঁকিপূর্ণ বেহাল দশার ব্রিজটির ব্যাপারে আমাদেরকে আগে কেউ কিছু জানাইনি। তবে সম্প্রতি আমি ব্রিজটির ব্যাপারে জানতে পেরেছি যে, এটি খুবই রিস্কি ও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ব্রিজটি যেন নতুন করে পুনরায় নির্মাণ করা হয়, সেজন্য আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’

 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status