বাংলারজমিন
দালালের খপ্পরে পড়ে সৌদিতে মানবেতর জীবনযাপন তিন যুবকের
চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
১৬ মে ২০২৫, শুক্রবারটাকা রোজগার করে পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে দালালের মাধ্যমে সৌদি আরব গিয়েছিলেন জাবেদ, ফাহিম ও শরিফুল নামে তিন যুবক। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর বাস্তবে রূপ নিলো কোথায়, সৌদির একটি কক্ষে বন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। দিন যাচ্ছে অনাহারে-অর্ধাহারে।
জানা যায়, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গনকীরপাড় গ্রামের মতিউর রহমান তার ছেলে জুনায়েদ আহম্মদ, ভাগিনা ফাহিম আহম্মেদ ও বন্ধুর ছেলে শরিফুল ইসলামকে উসমানপুর গ্রামের দালাল আল-আমিনের মাধ্যমে সৌদি আরব পাঠান গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি। ওই দালাল তাদের এয়ারপোর্টে কাজ দিবে বলে ৩ জনের কাছ থেকে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় মতিউর চুনারুঘাট থানায় ১৩ই মার্চ অভিযোগ দায়ের করে বলেন, তিনি আসামিদের প্রলোভনে পড়ে গনকীরপাড় গ্রামের আ. জাহির মাখনের স্ত্রী আছমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রথমে দেড় লাখ প্রেরণ করেন। এরপর আল-আমিন ও তার সহযোগী মাখন, আছমাকে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি জুনায়েদসহ ৩ যুবক সৌদি আরব চলে যায়। সৌদির বিমানবন্দর থেকে জুনায়েদদের রিসিভ করে নিয়ে যায় দালাল আল-আমিন। সেখানে একটি ছোট বাসায় অন্যান্য প্রবাসীদের সঙ্গে তাদের রাখা হয় এবং পাসপোর্ট-ভিসা আল-আমিনের কব্জায় রেখে দেয়। ছোট ঘরে তাদের তালাবদ্ধ করে রাখে।
দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তাদের কোনো কাজ না দিয়ে আল-আমিন নানা ধরনের টালবাহানা শুরু করে। মতিউর বলেন, তার ছেলের সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ করতে না পেরে তারা আতঙ্কে আছেন। গত কয়েকদিন আগে তার ছেলে অন্যের মোবাইল থেকে ফোনে তাদের দুরাবস্থার কথা জানালে তিনি দেশীয় দালাল আছমা ও মাখনের শরণাপন্ন হন কিন্তু তারা তাকে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে বিদায় করে দেয়। বিষয়টি এলাকার মুরব্বিদের জানালে তাকে থানার আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেন। গত ১৩ই মার্চ তিনি প্রবাসী দালাল আল-আমিন, দেশে থাকা দালাল মাখন ও আছমাকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এ বিষয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মতিউর রহমান আরও বলেন, জমি বিক্রি করে দালালের হাতে টাকা দিয়ে জমি এবং সন্তান দুটোই তার হারাতে হয়েছে। তিনি তার ছেলে, ভাগিনা ও বন্ধুর সন্তান শরিফুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। দালালের হাতে তুলে দেয়া সাড়ে ১৩ লাখ টাকা ও সন্তানদেন ফেরত চান এবং দালালদের বিচার দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাখন বলেন, তিনি মধ্যস্থতাকারী। টাকা-পয়সার বিষয়ে সৌদি প্রবাসী আল-আমিনই বলতে পারবেন।