বিশ্বজমিন
আদালতের নির্দেশে পুশব্যাক করা হচ্ছে: আসামের মুখ্যমন্ত্রী
মানবজমিন ডেস্ক
(২ দিন আগে) ৩১ মে ২০২৫, শনিবার, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:৫৩ অপরাহ্ন

এতদিন নীরব থাকার পর বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ নিয়ে নিজের নীরবতা ভাঙলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্বশর্মা। শুক্রবার তিনি নিশ্চিত করেন যে, তার রাজ্যে যেসব মানুষকে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল (এফটি) বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করেছে, তাদেরকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ৪ঠা ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশের কথা তিনি উল্লেখ করেন। ওই আদেশে বলা হয়, মাতিয়া বন্দি শিবিরে যেসব ‘ঘোষিত বিদেশী’ অবস্থান করছেন তাদেরকে ফেরত পাঠানোর পদক্ষেপ শুরু না করায় আদালত রাজ্যের কড়া সমালোচনা করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
উল্লেখ্য, রাজ্যের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল যেসব মানুষকে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করেছে তাদেরকে ২৩শে মে থেকে রাজ্যজুড়ে আটক করা হয়। এরই মধ্যে শুক্রবার হিমান্ত বিশ্বশর্মা ওই মন্তব্য করলেন। খবরে বলা হয়, অনেক পরিবার বলেছেন- তাদের প্রিয়জন কোথায় আছেন সে বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে পরিষ্কার করে কিছু বলা হয়নি। বাংলাদেশের লোকজনের রিপোর্ট ও ভিডিওতে তাদেরকে দেখে শনাস্ত করেছেন অনেক পরিবার। এসব মানুষকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, পুশব্যাক শব্দটি ব্যবহার করা হয় সীমান্ত দিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে লোকজনকে এক দেশ থেকে অন্য দেশে জোর করে ঠেলে পাঠানোকে। আনুষ্ঠানিকভাবে কাউকে তার দেশে ফেরত পাঠানো প্রক্রিয়ার ঠিক বিপরীত এই প্রক্রিয়া।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, আপনারা জানেন সুপ্রিম কোর্টে মামলা আছে। তারা আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন যেসব মানুষকে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে তাদেরকে যেকোনো উপায়ে নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাতে। বিদেশি ঘোষিত এ মানুষগুলো কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলও করেননি। আমরা তাদেরকে পুশব্যাক করছি। কোনো ব্যক্তি যদি বলেন যে তারা হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছেন, তাহলে তাদেরকে আমরা বিরক্ত করছি না।
হিমান্ত বিশ্বশর্মা গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক অভয় ওকা এবং উজ্জ্বল ভূঁইয়ার বেঞ্চের দেয়া রেফারেন্স উদ্ধৃত করেন। উল্লেখ্য, যেসব আটক মানুষকে আদালত অবৈধ বিদেশি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে তাদেরকে রাখা হয়েছে মাতিয়া ট্রানজিট ক্যাম্পে। তাদের অবস্থা সম্পর্কে রাজ্য আদালতকে জানায়, সেখানে ৬৩ জন বন্দি আছেন। তাদেরকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এসব মানুষের কোনো ঠিকানা জানা যায়নি। তারা মূলত কোন দেশের নাগরিক তা আনুষ্ঠানিকভাবে যাচাই প্রক্রিয়ার জন্য এ তথ্যটি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তা না পাওয়ায় তাদেরকে ফেরত পাঠানো প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে বলে আদালতকে জানানো হয়।
শুনানি শেষে আদালত রাজ্যের প্রতি আদেশে বলেন, আসামের মুখ্য সচিবের কাছে আমরা যখন জানতে চাই ওইসব ব্যক্তিকে এক থেকে ৬৩ পর্যন্ত সিরিয়াল নম্বর দেয়া হয়েছে- তাদেরকে কি চেনা গেছে। তিনি হ্যাঁ-সূচক জবাব দিয়েছেন। যখন জানা গেছে এসব মানুষ একটি বিশেষ দেশের নাগরিক তাহলে তাদেরকে ফেরত পাঠানো কেন রাজ্য সরকার শুরু করেনি, এর কোনো কারণ থাকতে পারে না। যদি বিদেশে এই ব্যক্তিদের ঠিকানা নাই পাওয়া যায়, যেহেতু রাজ্য জানে তারা একটি বিশেষ দেশের নাগরিক, তাই আমরা রাজ্যকে নির্দেশ দিচ্ছি অবিলম্বে এক থেকে ৬৩ সিরিয়াল নাম্বারের এসব বন্দিকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে।
হিমান্ত বিশ্বশর্মা বলেন, এ রায়ের ফলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পুশব্যাক করা হবে। শনাক্তকরণও করা হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কিছু মানুষকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে কেন্দ্রীয় সরকার। তিনি আরও জানান এফটি’তে আপিল করেছেন এবং তার শুনানি মুলতবি আছে যাদের, তাদেরকে ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য নয়। যারা এখনও চ্যালেঞ্জ করেননি তাদেরকে আসামে থাকতে দেয়া হবে না।
পাঠকের মতামত
বাংলাদেশে যে সব ভারতীয় অবৈধ ভাবে কর্মরত আছে তাদেরকেও ভারতে ফেরত পাঠানো হোক।
বাংলাদেশকে ভারত প্রীতি বাড়ানোর জন্য বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো দিয়ে এ অপকর্ম করানো হচ্ছে। পতিত শেখ হাসিনার লোকজন ভারতে বসে ভারত সরকারকে ইন্ধন যোগাচ্ছে।