বিশ্বজমিন
যুদ্ধবিরতির পর চীন থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র পেয়েছে ইরান
মানবজমিন ডেস্ক
(৫ ঘন্টা আগে) ৮ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১:০১ অপরাহ্ন

ইসরাইলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধের পর ধ্বংস হয়ে যাওয়া প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে চীন থেকে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম গ্রহণ করেছে ইরান। এক আরব গোয়েন্দা কর্মকর্তা ২৪শে জুন ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে প্রকৃত কার্যকর যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করে জানান যে, এই অস্ত্র হস্তান্তর যুদ্ধবিরতির পরপরই হয়েছে। আরেকজন আরব কর্মকর্তা বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরব মিত্ররা তেহরানের এই প্রতিরক্ষা জোরদারের বিষয়ে সচেতন এবং হোয়াইট হাউসকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন মিডল ইস্ট আই। এতে বলা হয়, ইরান ঠিক কত মিসাইল সিস্টেম পেয়েছে তা নিশ্চিত নয়। তবে একজন কর্মকর্তা জানান, ইরান এসব ক্ষেপণাস্ত্রের বিনিময়ে চীনে তেল রপ্তানি করছে। চীন ইরানি তেলের সর্ববৃহৎ আমদানিকারক এবং মে মাসে মার্কিন জ্বালানি তথ্য সংস্থা ইআইএ এক প্রতিবেদনে জানায়, ইরানের শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ অপরিশোধিত তেল ও কনডেনসেট রপ্তানি হয় চীনে। তেল নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ইরান মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশের ট্রান্সশিপমেন্ট হাব ব্যবহার করে তেলের উৎস গোপন রাখে। আরেকজন আরব কর্মকর্তা বলেন, ইরানিরা বেশ সৃজনশীলভাবে বাণিজ্য করে।
ওদিকে সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে ইরান ও এর পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বৈঠক হয়। মিডল ইস্ট আই হোয়াইট হাউসের কাছে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলেও প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত কোনো উত্তর মেলেনি।
ওদিকে ইরানের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ চীন ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক ও কৌশলগত সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়। যদিও ইসরাইল-ইরান যুদ্ধ চলাকালে চীন ও রাশিয়া অনেকটাই নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েছিল। এরপরও এই অস্ত্র সরবরাহ পশ্চিমা পর্যবেক্ষকদের নজর কেড়েছে। যুদ্ধ চলাকালীন ইসরাইল ইরানের আকাশে আধিপত্য কায়েম করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করে এবং একাধিক জেনারেল ও বিজ্ঞানীকে হত্যা করে। তবুও ইরানে সরকার টিকে থাকে। তেলআবিব ও হাইফার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পাল্টা ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা চালাতে সক্ষম হয়। এর পর একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
ইরানের প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের অতীত
১৯৮০-এর দশকের শেষ দিকে ইরান এইচওয়াই-২ সিল্কওয়ার্ম ক্রুজ মিসাইল চীনের কাছ থেকে উত্তর কোরিয়ার মাধ্যমে পেয়েছিল। তখন তারা ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। এই মিসাইল দিয়ে তারা কুয়েত এবং একটি মার্কিন পতাকাবাহী তেল ট্যাঙ্কারেও হামলা করেছিল। ২০১০ সালে ইরান চীনা এইচকিউ-৯ বিমান বিধ্বংসী মিসাইল পেয়েছে বলে রিপোর্ট প্রকাশ পায়। বর্তমানে ইরান রাশিয়ার এস-৩০০ মিসাইল ব্যবহার করে, যা বিমান, ড্রোন এবং কিছু ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিরোধে সক্ষম। এছাড়া ইরানের নিজস্ব তৈরি খোরদাদ সিরিজ এবং বাভার-৩৭৩ নামের এসএএম সিস্টেমও রয়েছে। তবে এসব সিস্টেমের ইসরাইলের ব্যবহৃত মার্কিন এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান প্রতিরোধের সক্ষমতা সীমিত বলেই ধারণা করা হয়। চীন ইতিমধ্যে তাদের এইচওয়াই-৯ ও এইচকিউ-১৬ সিস্টেম পাকিস্তানে বিক্রি করেছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিশরের কাছেও এইচকিউ-৯ রয়েছে।
পাঠকের মতামত
Bangladesh also should buy the same.