বিশ্বজমিন
ভয়াবহ বন্যায় পানির নিচে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপ, দুই দেশে ৫ জনের মৃত্যু
মানবজমিন ডেস্ক
(৩ সপ্তাহ আগে) ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, ২:৫৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৮ পূর্বাহ্ন
ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপ। প্রবল বৃষ্টিতে নদীগুলো আশপাশের সকল অঞ্চলকে প্লাবিত করেছে। এতে স্থানীয়ভাবে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ভয়াবহ এ বন্যায় হাজার হাজার ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। পোল্যান্ডে পানিতে ডুবে এক ব্যাক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডনাল্ড টাস্ক। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, ভয়াবহ বন্যায় রোমানিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল ভেসে গেছে। দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গালাটি এলাকায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে। ইউরোপের আরেকটি দেশ চেক প্রজাতন্ত্রের উত্তরাঞ্চলে এ পর্যন্ত ৫১ হাজার পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া বন্যার পানিতে আটকে পড়েছে রাজধানী প্রাগের বাসিন্দারা। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে দেশটির বহু অঞ্চল। রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্লাউস ইওহানিস বলেছেন, আমরা আবার জলবায়ু পরিবর্তনের মুখোমুখি হচ্ছি, যা ইউরোপ মহাদেশে ক্রমবর্ধমানভাবে প্রভাব বিস্তার করছে এবং আমরা এর নাটকীয় পরিণতি লক্ষ্য করছি। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সারা বিশ্বের মতো ইউরোপেও বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়ছে। উষ্ণ বায়ুমণ্ডলে আর্দ্রতা বৃদ্ধির ফলে এমন ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। রোমানিয়ার গালাটি অঞ্চলের স্লোবোজিয়া কোনাচির মেয়র বলেছেন, ওই অঞ্চলে ৭০০টির বেশি বসতবাড়ি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। গড় অনুপাতের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে দেশটি।
পোল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপোল শহরের মেয়র বলেছেন, স্থানীয় নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আশপাশের শহরে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে এসব শহরের নিচু স্থানগুলোতে নদীর পানি ঢুকে পড়েছে যাতে সেখানের বাসিন্দাদের উঁচু স্থানে স্থানান্তরিত করার জন্য কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় বাসিন্দা জোফিয়া ওসিয়াকা বলেছেন, শহরের সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কেননা মনে হচ্ছে এ বৃষ্টি থামার কোনো লক্ষণ নেই। পোল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ক্রাকোতে, বাসিন্দাদের বন্যা সুরক্ষার জন্য বালির ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। চেক সীমান্তের নিম্নাঞ্চলগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্লোডজকো শহর থেকে কথা বলতে গিয়ে ডনাল্ড টাস্ক বলেন, এ পর্যন্ত তারা মাত্র ১৬০০ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে সেখান থেকে সরাতে পেরেছে। তিনি অন্যান্য বাসিন্দাদের কাছে জরুরি পরিষেবা পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ওই এলাকায় ১৭ হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন। কিছু জায়গায়, মোবাইল টেলিফোন সিগন্যাল কাজ করছে না এবং ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে, এক্ষেত্রে তিনি স্টারলিংক স্যাটেলাইট ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পানির চাপে চেক প্রজাতন্ত্রের দক্ষিণ বোহেমিয়া অঞ্চলের একটি বাঁধ ফেটে আশপাশের অঞ্চলে ভয়াবহভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির পরিবেশমন্ত্রী পেত্র হ্লাদিক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
অনেক অনেক সমবেদনা রইল। ঢাকা থেকে।