বিশ্বজমিন
গাজাবাসীর আর্তি
আমার ছেলেমেয়ে অনাহারে ঘুমায়
মানবজমিন ডেস্ক
(৯ ঘন্টা আগে) ১৭ মে ২০২৫, শনিবার, ১০:৪০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৭:৩৮ অপরাহ্ন

গাজায় অবরোধের দশ সপ্তাহ পর এক ভয়াবহ মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। খাবার ও ওষুধের সঙ্কটের পাশাপাশি শিশুদের অনাহারে ঘুমাতে হচ্ছে। এমনই করুণ চিত্র তুলে ধরেছেন গাজাবাসী। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। ছয় বছরের ইসমাইল আবু ওদেহ একটি বাটি নিয়ে ফিরছিল। কিন্তু ভিড়ের মধ্যে পড়ে তা হাতছাড়া হয়ে যায়। সে কান্নায় ভেঙে পড়ে। এক মুরব্বি কিছুটা খাবার ভাগ করে তাকে খাওয়ান। পরদিন আর কোনো খাবার বা পানি পৌঁছায়নি তার ক্যাম্পে- একটি স্কুল ভবনে গড়া শরণার্থী শিবিরে থাকে সে। সেদিনও ইসমাইলকে কাটাতে হয়েছে অনাহারে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে, গাজা এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।
অন্যদিকে ইসরাইলি সরকার দাবি করছে- গাজায় খাদ্যের অভাব নেই, বরং হামাস ত্রাণ লুট করছে এবং বিক্রি করছে। তবে গাজায় বসবাসরত সাধারণ মানুষ বলছেন ভিন্ন কথা। বিবিসির সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ ও ফোনে যোগাযোগে তারা জানান, দিনে একটি খাবার জোটানোও কঠিন হয়ে পড়েছে। বহু রান্নাঘর বন্ধ হয়ে গেছে। বাজারে যা আছে, তার দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
এক স্বেচ্ছাসেবী বলেন, আমার রান্নাঘর ১০ দিন আগে বন্ধ হয়ে গেছে। এই অসহায়ত্ব ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। গাজার মধ্যাঞ্চলে বাস্তুচ্যুত আদহাম আল-বাৎরাউই জানান, তিনি পাস্তা সিদ্ধ করে তা মাখিয়ে রুটি সদৃশ কিছু তৈরি করেন। তিনি বলেন, আমরা এমনভাবে খাওয়ার কৌশল আবিষ্কার করছি, যা আগে কল্পনাও করিনি। দেইর আল-বালাহ শহরে ২৩ বছর বয়সী নার্স রাওয়া মোহসেন জানান, তার তিন ও দেড় বছর বয়সী দুই মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকাই এখন চ্যালেঞ্জ। তার ভাষায়- আমার মেয়েরা এখন বোমার শব্দে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে আমি ওদের চেয়ে বেশি ভয় পাই। শুক্রবার এক বোমা হামলায় তাদের ভবনের দরজা-জানালা উড়ে যায়। আল্লাহর শোকর, আমি আর আমার মেয়েরা বেঁচে আছি। কিন্তু এখন যাব কোথায়? ইসরাইলি হামলায় ইউরোপিয়ান হাসপাতাল আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় নার্স রান্ডা সাঈদ বলেন, এটা ছিল এক নিখাদ আতঙ্কের মুহূর্ত। হাসপাতালটি এখন আর চালু নেই। রোগীদের স্থানান্তর করা হয়েছে নাসের হাসপাতালে, যেখানে ওষুধ, ব্যান্ডেজ এমনকি ব্যথানাশক পর্যন্ত কমে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে, যেখানে ইসরাইলি বাহিনী নিরাপত্তা দেবে। জাতিসংঘ এ পরিকল্পনার সমালোচনা করে বলেছে- ত্রাণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। গাজা শহরে ইসমাইলের পিতা বলেন, আমার ছেলেমেয়েরা না খেয়ে ঘুমায়। আমি সন্তানদের জন্য কিছু করতে না পেরে একা বসে কাঁদি। নিজেকে একটা ছোট বাচ্চার মতো মনে হয়।
পাঠকের মতামত
আমার জীবনের বিনিময়ে যদি পৃথিবীর অনাহারী মানুষ একবেলা ভালভাবে খেতে পারতো, আমি তাই করতাম।
হে আল্লাহ আপনি আরব দে সমস্ত ধন সম্পদ তুলে নিন এবং গাজার অনাহারী শিশুদের কষ্ট বুঝতে শিখুক অথবা হেদায়েত দান করুন এবং আপনার রাস্তায় জিহাদ করার তৌফিক দান করুন । হে দীন দুনিয়ার মালিক এই অবরুদ্ধ গাজা বাসীর জন্য মান সালুয়া পাঠিয়ে দিন । আমিন ।