খেলা
বার্নাব্যুতে আনচেলোত্তি মদরিচের ‘বিদায় রাগিণী’
স্পোর্টস ডেস্ক
২৬ মে ২০২৫, সোমবার
রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে কঠিন হৃদয়ের মানুষ মনে করা হয়। অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত যিনি নিমিষেই নিয়ে ফেলেন। তবে সেই মানুষটিই শত শত ক্যামেরার সামনে কেঁদে ফেললেন! শনিবার লুকা মদরিচ যখন সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে তার বিদায়ী ভাষণ শেষ করলেন, তখন টিভি পর্দায় ভেসে উঠলো পেরেজের মুখ। তিনি কাঁদছেন অন্য সাধারণ দর্শকদের মতোই। একই রাতে রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় জানালেন তাদের ইতিহাসের সফলতম কোচ কার্লো আনচেলোত্তিও। ২০১২তে টটেনহ্যাম হটস্পার থেকে রিয়ালে উড়ে আসেন লুকা মদরিচ। প্রথম মৌসুমে সেবার সমর্থকদের ভোটে স্প্যানিশ দৈনিক মার্কার লা লিগার সবচেয়ে বাজে সাইনিং হিসেবে উঠে আসে এই ক্রোয়াট মিডফিল্ডারের নাম। রিয়ালের তৎকালীন কোচ হোসে মরিনহো রিয়াল সমর্থকদের বলেছিলেন মদরিচকে একটু সময় দিতে। সেই সময়টা পেয়ে ১৩ বছর পর লুকা মদরিচ যখন বার্নাব্যুতে বললেন, ‘এই যাত্রা শেষ হয়ে গিয়েছে দেখে কেঁদোনা, বরং হাসো, কারণ এটি ঘটেছে’, তখন ক্যামেরা যেদিকেই ঘুরেছে, মদরিচের সতীর্থ, সমর্থক কিংবা স্টাফ সবার চোখে পানি দেখা গেছে। রিয়ালের হয়ে ৫৯১ ম্যাচ খেলে ছয়টি চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপাসহ এই ৩৯ বছর বয়সী মিডফিল্ডার সাকুল্যে জিতেছেন ২৮টি ট্রফি। স্প্যানিশ লা লিগায় রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ের পর মাইক্রোফোন হাতে মদরিচ বলেন, ‘এই মুহূর্তটা আসুক, তা আমি কখনওই চাইনি। এটি ছিল সুদীর্ঘ তবে বিস্ময়কর এক যাত্রা। সবার আগে আমি ক্লাব, ক্লাবের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। ধন্যবাদ জানাতে চাই এখানে পাওয়া সমস্ত কোচ ও সতীর্থকে, যারা আমাকে সঙ্গ দিয়েছেন এবং সেসব মানুষকে যারা আমাকে সহায়তা করেছেন।’ মদরিচ শেষটা করেন এভাবে, ‘আমার মনে গেঁথে যাওয়া একটি কথা শোনাই, ‘শেষ হওয়ায় কেঁদো না, হাসো, কেননা এটি ঘটেছে।’ মদরিচের ঝুলিতে আরও একটি ট্রফি যোগ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে সেই ক্লাব বিশ্বকাপে থাকছেন না কার্লো আনচেলোত্তি। তিনি যোগ দিচ্ছেন ব্রাজিল দলের সঙ্গে। রিয়ালে নিজের শেষ মৌসুমটা খালি হাতে শেষ করলেও ১২৩ বছরের ক্লাব ইতিহাসে সবচেয়ে সফল কোচ এই ইতালিয়ানই। ২০১৪ ও ২০২১-এ দুই দফায় রিয়ালের হয়ে তিনি জিতেছেন ৩টি চ্যাম্পিয়নস লীগ, ২টি ক্লাব বিশ্বকাপ, ৩টি ইউরোপিয়ান সুপার কাপ, ২টি লা লিগা, ২টি কোপা দেল রে, ২টি স্প্যানিশ সুপার কাপ ও ১টি ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ। মাইক্রোফোন নিয়ে বার্নাব্যুতে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে আনচেলোত্তি বলেন, ‘আমি খুব সন্তুষ্টি নিয়ে এখান থেকে বিদায় নিচ্ছি। এই পরিবারের সদস্য হতে পারা, এখানে ইতিহাস রচনা ও এর অংশ হতে পারা সম্মানের, আনন্দের। প্রথম দিন থেকে এটিই লক্ষ্য ছিল এবং আমি তা পূরণ করতে পেরেছি।’