বাংলারজমিন
ঝিনাইদহের ৫ যুবককে কম্বোডিয়ায় নিয়ে বিক্রির অভিযোগ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
২ জুন ২০২৫, সোমবারআদম পাচারকারী চক্রের প্রতারণার শিকার হয়ে ঝিনাইদহে বহু পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। আর্থিক সংগতি হারিয়ে পরিবারগুলোতে চলছে কষ্ট আর শোকের মাতম। আদাম পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলেও তারা রয়েছে বহাল তবিয়তে। প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে দালালরা সব কিছু ম্যানেজ করছেন। ফলে ক্ষতিগ্রস' পরিবারগুলো কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। গতকাল দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমনই অভিযোগ করেন হালিমা খাতুনসহ ৫ জন অসহায় নারী। তাদের ছেলে ও স্বামীদের ফেরতের দাবি জানান। হালিমার ছেলে শাহীনকে থাইল্যান্ডে নিয়ে যাবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কম্বোডিয়ায় বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। তার মতো আরো ৮ যুবককে চক্রটি প্রতিশ্রুতি দেয়া দেশে না পাঠিয়ে কম্বোডিয়া এক কোম্পাপানির কাছে প্রতিদিন ১৮ ঘন্টা কাজের বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছে। তারা এখন চরম ঝুকির মধ্যে জীবনযাপন করছেন।
হরিণাকুন্ডু উপজেলার শাখারীদহ গ্রামের কুয়েত প্রবাসি আলতাফ হোসেনের স্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের আলী আহম্মদের ছেলে ফজলুল করিম ফয়জুল, তার ছেলে ফয়সাল আহমেদ, স্ত্রী জাহানারা খাতুন ও পুত্রবধু তারানা হক রথী (২০) বিদেশ পাঠানোর নামে এলাকার বহু মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও ঠকবাজীর মাধ্যমে কোটি টাকারও বেশি অর্থ হাতিয়ে নিয়ে গাঁ ঢাকা দিয়েছে। হালিমা খাতুন দাবী করেন, তার ছেলে শাহীন ছাড়াও নাথকুন্ডু গ্রামের মো. আকরাম আলী, একই গ্রামের সিফাতুল্লা, হলিধানী গ্রামের মো. রাহুল আহমেদ, প্রতাপুপর গ্রামের রানা মিয়া, সদর উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের সবুজ, ঝিনাইদহ পৌর এলাকার কলাবাগানপাড়ার ওবাইদুর রহমানের ছেলে নাজিব ও বেড়াদি গ্রামের আব্দুল গাফ্ফারের কাছ থেকে মাথাপ্রতি ৭ লাখ টাকা করে মোট ৫৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এরমধ্যে সবুজ, নাজিব ও আব্দুল গাফ্ফার নেপাল বিমান বন্দর থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।
প্রতারণার শিকার নাজিব ও সবুজ নামে দুই যুবক মুঠোফোনে জানান, থাইল্যান্ডে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি দেয়ার জন্য ফজলুল করিম ফয়জুলসহ আসামীগণ তাদের প্রলুদ্ধ করে। তাদের কথা বিশ্বাস করে ঝিনাইদহ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে জনপ্রতি ৭ লক্ষ টাকা কয়জুলের নিকট দেন। টাকা নেয়ার পর তাদের থাইল্যান্ডে না পাঠিয়ে কম্বোডিয়ার স্ক্যাম্প কোম্পানীতে ১৮ ঘন্টা শ্রমের চুক্তিতে বিক্রি করে দেন। ফলে সেখানে তারা অমানববিক কষ্টের মধ্যে আছেন। মাসে মাসে কোন টাকা পাঠাতেও পারছেন না। তাই ব্যাংক ঋণ দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। পরিসি'তি এমন এক পর্যায়ে পৌচেছে যে, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো তো দূরের কথা এখন তারা জীবন নিয়ে ফিরতে পারবে কিনা তা নিয়ে পরিবারের লোকজন শংকা প্রকাশ করেছে।