বাংলারজমিন
উখিয়ায় গরিবের চাল ইউপি সদস্যের পেটে
স্টাফ রিপোর্টার, উখিয়া থেকে
২ জুন ২০২৫, সোমবারকক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বৃহত্তর রাজাপালং ও রত্নাপালং দুই ইউনিয়নে ‘ভিজিএফ’ ও ‘ভিডব্লিউবি’ চাল বিতরণে ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত ২৬শে মে চাল বিতরণের সময় উক্ত দুটি ইউনিয়ন পরিষদের আশপাশে শত শত মানুষ এ নিয়ে অভিযোগ করেছে। অভিযোগের সূত্র ধরে রাজাপালং ইউনিয়নে সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বছরে দুবার রোজার ঈদ এবং কোরবানির ঈদের আগে ১০ কেজি করে ভিজিএফ চাল দেয় সরকার গরিব অসহায়দের জন্য। সেই চাল প্রতি বছরের ন্যায় এই বছর এলেও বিতরণে চরম বৈষম্য করেছে ইউপি সদস্যরা। বিশেষ করে রাজাপালং ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সৈয়দ হামজা নিজস্ব লোক দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে চাল কিনছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ভিজিএফ কার্ড বিক্রির অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। যাদের অট্টালিকা আছে তারাই মূলত এই চাল পেয়েছেন। যারা গরিব এই চাল পাওয়ার যোগ্য, তারা এই চাল থেকে বঞ্চিত হয়েছে। দুই বছর মেয়াদি ৩০ কেজি চালের ২০২৫-২০২৬ ভিডব্লিউবি নতুন আবেদনেও হয়েছে চরম দুর্নীতি অনিয়ম। অনলাইন করার পরেও নির্দিষ্ট ঘুষের চিহ্ন ছাড়া কাগজ জমা নেয়নি ইউপি সদস্যরা। যারা ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা ঘুষ দিতে পেরেছে তাদের কাগজে একটি বিশেষ চিহ্ন থাকায় তাদের কাগজ জমা দেওয়ার আগেই নিয়ে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যরা। এভাবে গরিবের যাবতীয় চালের কার্ডে দুর্নীতি অনিয়নের অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগীরা।
উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ১০ কেজি চালের কার্ডগুলো ইউপি সদস্যদের আপন লোক যারা তারাই পেয়েছে। কোন গরিব পায়নি। ইউপি সদস্য নিজেই এই চালের কার্ড বিক্রি করেছে এমন অভিযোগ উঠেছে ।
ইউনিয়ন পরিষদের সামনে তামিম নামে এক যুবক বলেছেন, হাতেগোনা কয়েকটি গরিব পরিবারে একটি করে কার্ড পেলেও ধনী ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ঘরে পেয়েছে ৫ এর অধিক কার্ড। বেশি পাওয়ার কথা গরিবদের। সেখানে ধনীরা পেয়েছে বেশি কার্ড। আরো জানা গেছে, ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সৈয়দ হামজা রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের অঘোষিত চেয়ারম্যান। ইউনিয়ন পরিষদে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থাকলেও সৈয়দ হামজাই ক্ষমতাশালী। সে অধিকাংশ কার্ড মিলেমিশে বিক্রি করে দিয়েছে চাল ব্যবসায়ীর কাছে। পরিষদের সামনেই চাল ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট দাঁড়িয়ে গাড়িতে চাল লোড করে পাচার করেছে। একেক জনের হাতে মিনিমাম ৫০টি করে কার্ড দেখা গেছে। সব কিছু ইউপি সদস্য সৈয়দ হামজার নেতৃত্বেই ঘটছে। এ ব্যাপারে রাজাপালং ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর শাহেদুল ইসলাম নোমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তিনি সামগ্রিক বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছেন বলে জানান। এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি জানার পর চেয়ারম্যানকে দেখতে বলেছেন বলে জানান।