দেশ বিদেশ
ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সংসদ সদস্যদের মন্তব্যে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে নিন্দার ঝড়
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা
২৯ জুন ২০২৫, রবিবারদক্ষিণ কলকাতার একটি আইন কলেজে ২৪ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিরোধীদের আন্দোলন শনিবার উত্তাল হয়ে উঠেছে। এই আবহে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ সংসদ সদস্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সংসদ সদস্যদের বক্তব্যকে ‘লজ্জাজনক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। শ্রীরামপুরের সংসদ সদস্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, যদি কোনো বন্ধু তার বন্ধুকে ধর্ষণ করে তবে কী করা যেতে পারে? স্কুলে পুলিশ থাকবে? ছাত্ররা অন্য একজন ছাত্রীর সঙ্গে এটি করেছে। তাকে (ভুক্তভোগীকে) কে রক্ষা করবে? সংসদ সদস্য নির্বিকার ভাবে বলেন, এই সমস্ত অপরাধ এবং শ্লীলতাহানি কে করে? কিছু পুরুষ এটা করে। তাহলে, মহিলাদের কার বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত? মহিলাদের এই বিকৃত পুরুষদের বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত। আরজি-কর মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার ১১ মাস পরে ফের কলেজের মধ্যে এক সহপাঠী ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশের পরিবর্তে শাসক দলের সংসদ সদস্যদের অমার্জিত মন্তব্যকে ধিক্কার জানিয়েছেন নাগরিক সমাজ। সমাজ মাধ্যমেও সংসদ সদস্যদের মানসিকতা ও মনোভাব নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। সংসদ সদস্যদের মন্তব্যকে বিজেপি লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেছে। ছাত্রী ধর্ষণের মতো ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনো মন্তব্য করেননি। তবে শাসক দলের নেতারা বিরোধী দলের আন্দোলনের সমালোচনা করছেন। এদিকে, দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজের মধ্যে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে কলেজেরই তিনজন। মূল অভিযুক্ত কলেজের প্রাক্তন এবং অস্থায়ী কর্মী। অন্য দু’জন কলেজের ছাত্র। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত বলে অভিযোগ। শনিবার কলেজের রক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই রক্ষীর ঘরেই ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ঘটনার সময় রক্ষী উপস্থিত থাকলেও চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শুক্রবার নির্যাতিতার মেডিকেল পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গিয়েছে। বিভিন্ন দল ও সংগঠন আরজি-কর পরবর্তী প্রতিবাদের ধাঁচেই এবারেও প্রতিবাদ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, এটা সভ্যতার সংকট। সাংস্কৃতিক সংকট। মূল্যবোধের সংকট। সুতরাং সকলকে নামতে হবে। প্রদেশ কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি তথা সাবেক সংসদ সদস্য অধীর চৌধুরীও বলছেন, এটা নাগরিক আন্দোলনের চেহারা নেয়া খুব দরকার। মানুষ বিরক্ত। নাগরিক সমাজের অভ্যুত্থান ছাড়া কিছু বদলাবে না। রোববারই কয়েকটি সংগঠন রাতজাগার মতো প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। বিজেপি’র বিক্ষোভ ঘিরে শনিবার দক্ষিণ কলকাতায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এদিন বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ করেছে।