ঢাকা, ২ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৫ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

দেশ বিদেশ

ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ বিতর্ক নতুন দল গঠনের হুমকি ইলন মাস্কের

মানবজমিন ডেস্ক
২ জুলাই ২০২৫, বুধবার
mzamin

প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ নিয়ে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি। এ নিয়ে সিনেট থেকে শুরু করে দেশের সর্বত্রই আলোচনা-সমালোচনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে ট্রাম্পের এক সময়কার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইলন মাস্কও এই বিলের কঠিন সমালোচনা করেছেন। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নতুন দল গঠনের। বলেছেন, যদি এই বিল পাস হয় তাহলে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবেন তিনি। মাস্কের এই ঘোষণা মার্কিন রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই বিলে করছাড় এবং স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্য কর্মসূচিতে ব্যাপক কাটছাঁটের প্রস্তাব করা হয়েছে। যার বিরোধিতা করেছেন একাধিক সিনেটর। সোমবার সিনেটে ট্রাম্পের বিল নিয়ে চূড়ান্ত ভোটাভুটির আগে বিতর্ক চলাকালীন মাস্ক তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরম এক্সে সতর্কবার্তা দেন। তিনি লিখেন, কংগ্রেসের প্রতিটি সদস্য যারা সরকারি ব্যয় কমানোর জন্য প্রচারণা চালিয়েছিলেন এবং তারপর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঋণ বৃদ্ধির পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, তাদের লজ্জায় মাথা নিচু করা উচিত। আর যদি এই পৃথিবীতে আমার করা শেষ কোনো কাজ হয়, তাহলে সেটি হলো পরের বছর তাদের প্রাইমারি নির্বাচনে হারানো। কয়েক ঘণ্টা পরে তিনি আরও একধাপ গিয়ে এক্সে ঘোষণা করেন, যদি উদ্ভট ব্যয় বিল পাস হয়, তাহলে পরের দিন আমেরিকা পার্টি গঠিত হবে। আমাদের দেশের ডেমোক্রেট-রিপাবলিকান ঐক্যবদ্ধ দলের বিকল্প প্রয়োজন যাতে জনগণের কণ্ঠস্বর সামনে আসে। যেখানে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানদের বাইরে অন্য কোনো রাজনৈতিক দল দাঁড়াতে পারেনি সেখানে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা চাঞ্চল্যকরই বটে। এ দুই দলের শাসনকে একদলীয় শাসন বলে আখ্যা দিয়েছেন মাস্ক। তার মতে যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেট-রিপাবলিকান মিলিয়ে একদলীয় শাসন চলছে। এর পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রে এখন নতুন দলের প্রয়োজন। যারা সত্যিকার অর্থে জনগণের কথা বলবে। কয়েক সপ্তাহ ধরেই ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বিলের বিরুদ্ধে কথা বলছেন মাস্ক। চলতি মাসের শুরুতে এই বিল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মাস্কের সঙ্গে ট্রাম্পের প্রকাশ্য বিরোধ তৈরি হয়। ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ৯৪০ পৃষ্ঠার বিলটি নিয়ে মার্কিন সিনেটে দীর্ঘ সময় ভোট চলেছে। যদিও এখনো এর পক্ষে ৫০টি ভোট নিশ্চিত করতে পারেনি রিপাবলিকানরা।  শেষ পর্যন্ত বিলটি পাস হবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেছেন, এই বিলের বিষয়ে ট্রাম্প খুবই আত্মবিশ্বাসী। এটি ৪ঠা জুলাই তার ডেস্কে পাঠানো হবে। সেদিন প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষর করলেই বিলটি চূড়ান্ত হবে বলে জানান লিভিট। এদিকে এই বিলের পক্ষে বিপক্ষে সিনেটে ভোটাভুটি হয়েছে। বিবিসি’র এক খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ এই বিল নিয়ে মার্কিন সিনেটে দীর্ঘ সময় ভোট হয়েছে।  সোমবার সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিলের সংশোধনীর পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন সিনেটররা। প্রত্যেকেই ভোট দিয়েছেন। ২১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এই ভোটাভুটি চলেছে।  
এই বিলের কঠিন সমালোচনা করেছেন ইলন মাস্ক। বলেছেন, একসময় যেই রিপাবলিকানরা সরকারি ব্যয় কমানো নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন তারাই এখন ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ঋণ বৃদ্ধির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এতে প্রযুক্তি খাতের এই বিলিয়নিয়ার এর আগে ট্রাম্প প্রশাসনের ডজে (ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি) কর্মসূচিতে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি সেখান থেকে সরে এসেছেন। ওই বিভাগের কাজ হচ্ছে বিভিন্ন খাতে সরকারি ব্যয় কমানো। মূলত ট্রাম্পের এই ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল আইনের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে ডজের দায়িত্ব থেকে সরে আসেন মাস্ক। এদিকে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের তথ্য বলছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের পরিমাণ ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার। যদি ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বিলটি পাস হয় তাহলে সেই পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। আগের সংখ্যার সঙ্গে আরও ৩ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার যোগ হবে বলে সতর্ক করেছেন সমালোচকরা। যুক্তরাষ্ট্রের নির্দলীয় ফেডারেল সংস্থা কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস বলছে, বিলটিতে প্রস্তাবিত কাটছাঁটের ফলে সরকারি স্বাস্থ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হবে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ আমেরিকান। সরকারি ওয়েলফেয়ার কর্মসূচিগুলোতে ট্রাম্পের কাটছাঁট নিয়ে আলোচনা করেছেন সিনেটররা। 
এক সংশোধনীতে সিনেটর জন কর্নিন বলেছেন, সরকারি অনুদান যুক্তরাষ্ট্রের নিম্ন আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যগত প্রয়োজন মেটাতে কাজ করে। এখন যদি এর বাজেট হ্রাস করা হয় তাহলে এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ডেমোক্রেটরাও এই বিলের কড়া সমালোচনা করেছে। এই বিল পাস করতে সংশোধনী দিয়েছেন সিনেটর এড মার্কি। তার মতে স্বাস্থ্য খাতে তহবিল কমালে গ্রামীণ হাসপাতালগুলো তাদের পরিষেবা আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ করতে বাধ্য হবে। ডেমোক্রেটদের আরেকটি সংশোধনীতে বলা হয়েছে, এই বিলের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা বন্ধেরও সুপারিশ করা হয়েছে। যা মার্কিন জনগণের জন্য খারাপ হবে। 
 

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status