প্রথম পাতা
জুলাই-আগস্টে বিএনপি’র ৪২২ নেতাকর্মী নিহত
স্টাফ রিপোর্টার
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, সোমবার‘জুলাই গণহত্যায়’ গত ১৩ই আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিবেদনের তথ্যমতে সমগ্র বাংলাদেশে ৮৭৫ জন মানুষ শহীদ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরমধ্যে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপি’র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, দেশ জুড়ে শহীদ হওয়া সকল শ্রেণি-পেশা ও রাজনীতির মানুষগুলোর এ বিশাল অংশ যে বিএনপিরই নেতাকর্মী-এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং আমাদের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের অনিবার্য ফল। গতকাল রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ১৫ই সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ‘গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পথযাত্রায় বিএনপি’র ভূমিকা, অবদান এবং প্রত্যাশা’র বিষয়গুলো তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকে বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের স্বাধীনতাকে যখনই গ্রাস করেছে স্বৈরতন্ত্র, প্রতিবারই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বিএনপি। ১৬ বছরের স্বৈরাচারী দুঃশাসনকে চূর্ণ করে গত ৫ই আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আবারো মুক্তির স্বাদ পায়, গণতন্ত্রের পথ সুগম হয়। অসংখ্য ব্যক্তি ও পরিবার রয়েছে, যাদের বছরের পর বছর ধরে ত্যাগের মহিমায় আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। পোশাক শ্রমিক কিংবা রিকশাচালক, পাবলিক কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, বাম কিংবা ডান আদর্শের অনুসারী, সকল মত ও পথের রাজনৈতিক কিংবা অরাজনৈতিক ব্যক্তি হতাহতের পরিচয় যাই হোক না কেন, প্রতিটি প্রাণের মূল্য ও রক্তের মর্যাদা সমান।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বের অবদানে গড়ে ওঠা দীর্ঘদিনের ঐক্যকে ধারণ করে, গণতন্ত্রের পক্ষের সকল শক্তির বলিষ্ঠ ভূমিকায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে। বাংলাদেশের জনগণের এই বিজয় শুধুই দেশের মালিকানা ফিরে পাওয়ার বিষয় নয়, এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার প্রতিশ্রুতি, যা অসীম ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত। শেখ হাসিনা পদত্যাগের জন্য যে জাতীয় ঐকমত্য আমরা দেখেছি, তা কিন্তু হঠাৎ করে গড়ে ওঠেনি। এটি মূলত অবৈধ সরকারের অত্যাচার-অবিচার, দুর্নীতি-দুঃশাসন, বঞ্চনা-অবজ্ঞা এবং শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। বিএনপি দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে গণঅভ্যুত্থানের সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে নেমে আসে। জনগণের কাতারে নেমে আসে বিএনপি’র সঙ্গে সমমনা সকল রাজনৈতিক দল তথা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিসমূহ।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন আমাদের যা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাহলো ধৈর্য ধরে, সহনশীলতার সঙ্গে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে- তারা যেন কাজ করতে পারে, তাদের কাজ করতে দিন। অতি দ্রুত সংস্কার কাজে তারা হাত দিয়েছেন। আমরা মনে করি, এই কাজগুলো দরকার। এই কাজগুলো অতি দ্রুত শেষ করে একটা নির্বাচনের দিকে যাওয়া যে নির্বাচনটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হবে এবং জনগণ অবাধ ও ?সুষ্ঠু নির্বাচনে ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। তারপরই বাকি কাজগুলো তারা সম্পন্ন করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, নির্বাচনকেন্দ্রিক যে সংস্কারগুলো, অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যেমন, আমাদের অনেককেই শাস্তি দিয়ে দিয়েছে। আমাদের শাস্তি দেয়ায় দুই বছর তো নির্বাচন করতে পারবো না। সেটার সংস্কার হওয়া প্রয়োজন তো। আর অন্যান্য সংস্কার যেগুলো আছে, সেটা যে সরকার জনগণের ভোটে আসবে তারা করবেন। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো রাষ্ট্র মেরামতে প্রণীত ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের কথাও বলেন তিনি।
নিজের মধ্যকার সম্মিলিত ঐক্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কী? আমরা ফ্যাসিবাদকে সরিয়েছি, হাসিনাকে সরিয়েছি- এখন একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আছে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদেরকে অতি দ্রুত আমাদের সকলের মতামত নিয়ে একটি সংস্কারের মধ্যদিয়ে তারা নির্বাচনে যাবে।
‘বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার। এটা করেই কিন্তু যারা দুষ্ট, যারা সবসময় ফায়দা লুটতে চায়, তারা বলে। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ তুলনা হতেই পারে না। কারণ আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক দল নয়, গণবিরোধী একটা দল, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে গণতান্ত্রিক মানুষকে হত্যাকারী একটি দল। আর বিএনপি হচ্ছে গণতন্ত্রকে জীবন্ত করার দল। ১৯৭৫ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় রাজনীতি থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিলেন, বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছেন, আমরাই তত্ত্বাবধায়ক সিস্টেম চালু করেছি। সুতরাং এদেশে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার ফান্ডামেন্টাল জিনিস প্রত্যেকটা আমাদের হাতে গড়া এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর আমরা করেছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শিল্প এলাকাগুলোতে যে অশান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে, এই পর্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ফ্যাসিবাদের দোসরদেরই ইঙ্গিত আছে। এটা পরিষ্কার হয়েছে, বুঝা যাচ্ছে। এই জিনিসগুলো থেকে মনে হচ্ছে যে, একটা চক্রান্ত চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায়, আপনাদের কাছ থেকে শুনে-টুনে যা বুঝি যে, সীমান্তের ওপার থেকে কথিত ফ্যাসিবাদী হাসিনার অডিও-টডিও ফাঁস করে দেয়া হয়, যেগুলোতে বিভ্রান্তিকর খবর থাকে। অন্যদিকে আবার প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশে যারা ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু তাদের ওপরে অত্যাচার-নির্যাতন চালানো হচ্ছে, যেটা একেবারে টোটালি বাকাওয়াজ। এটা আমরা শুধু নয়, ভারত থেকে যে সমস্ত সাংবাদিকরা এসেছিলেন তারা পর্যন্ত দেখে গেছেন, তারা রিপোর্ট করেছেন-যেটা বলা হচ্ছে, সেটা সঠিক নয়। যেটা হয়েছে সেটা হচ্ছে, রাজনৈতিক কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে- সেটা সবসময় হয়, হতেই পারে। সুতরাং চক্রান্তটা ওই জায়গায়। আমরা চক্রান্ত পছন্দও করি না।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান এবং সালাহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
নুর আবসার, এটাই তো আওয়ামী লীগ কে বেকায়দায় ফেলে দিছে।
কিছুদিন পর বলবে, যত মানুষ মারা গেছে সবই বি এন পি র
যার বিএনপির নেতা কর্মীদের হত্যা করেছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনের তাদেরকে শান্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
কাকা দেখছি কাউয়ার মত,একেক সময় একেক কথা বলছে!!!!!!
বি এন পির অনেক শহীদ হয়েছেন এটা সত্য ।এদের জন্য তারা কি করছেন ওনারা ব্যস্ত মামলা নিয়ে ।কোন কোন শহীদের ঘরে ঠিকমতো খাবারও নাই ।ফখরুল সাহেব সংখ্যা দিয়ে কর্মীদের গননা করার সময় এখন নয় ।শহীদ পরিবারকে বুকের মাঝে ঠাই দেন ।শুনেছি আপনি সিলেটে আসবেন শহীদ দের একটু খোজখবর নিবেন প্লি জ ।
২৮ অক্টবর এই মানুষগুলো কোথায় ছিল? জনাব প্রত্যেকটা কোথায় হিসাব জনতা রাখতেছে, হিসেবে করে কথা বলুন। ভোটার সময় এগুলো বুমেরাং হবে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে শহীদ'দের মধ্যে প্রায় সবাই বিএনপি ওহ্ নাহ্ ৭০ শতাংশ হবে। তবে চিন্তার বিষয় হলো এতোকিছুর পরও গত ১৫ বছর বিএনপি মাফিয়া লীগের চুলটাও ছিঁড়তে পারেনি কেন!