দেশ বিদেশ
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব
রাজশাহীর ৩ নেতাকে মহানগর বিএনপি’র সতর্কবার্তা
রাজশাহী প্রতিনিধি
২১ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার
দলীয় শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে কেন্দ্রীয় কমিটির তিন নেতাকে রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা পাঠানোর ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে রাজশাহী বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে।
প্রশ্ন উঠছে বিএনপির সাংগঠনিক নীতিমালা অনুযায়ী মহানগর আহ্বায়ক কমিটির নেতারা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সতর্কবার্তা বা বহিষ্কারাদেশ দেয়ার কোনো ক্ষমতা রাখেন কিনা তা নিয়ে।
সতর্কবার্তা পাঠানো কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা হলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহীর সাবেক মেয়র এবং এমপি মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং বিএনপির ত্রাণ পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক এ্যাড. শফিকুল হক মিলন।
গত ১৮ মার্চ (মঙ্গলবার) রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী এশা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা ও সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠির মাধ্যমে এই সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। চিঠিতে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে মহানগর বিএনপির অনুমোদন ছাড়া তিন নেতা বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করেছেন। দলীয় ব্যানার ব্যবহার করে সংগঠনের গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগও আনা হয়েছে।
বিশেষ করে শফিকুল হক মিলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তিনি মহানগর বিএনপির সঙ্গে কোনো সমন্বয় ছাড়াই বিভিন্ন সাংগঠনিক পদ ঘোষণা করেছেন এবং দলীয় শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করেছেন। অন্যদিকে, মিজানুর রহমান মিনু ও মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা মহানগর বিএনপির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন, যা মহানগর কমিটির ঐক্য বিনষ্ট করছে।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ জানান, দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কেন্দ্রের নির্দেশেই এই সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আব্দুস সালামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল এই সমস্যার সমাধান করতে। কিন্তু অভিযুক্ত নেতারা বারবার একই কাজ করায় বাধ্য হয়ে তাদের সতর্ক করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিনু মানবজমিনকে বলেন, ‘আমরা তারেক রহমানের নির্দেশে কাজ করি। মহানগর বিএনপির কোনো অধিকার নেই আমাদের সতর্ক করার। সতর্কবার্তা প্রদান বা বহিষ্কার আদেশ দেওয়ার এখতিয়ার একমাত্র দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের রয়েছে।’
এ্যাড. শফিকুল হক মিলন মানবজমিনকে বলেন. আমি মহানগরে কোনো প্রেগ্রাম করিনি আমার নির্বাচনি এলাকা রাজশাহী-৩ পবা-মোহনপুরের প্রেগ্রাম নিয়ে সেখানকার মানুষদের নিয়ে কাজ করছি। মহানগর কমিটির নিজেদেও অযোগ্যতার কারনে শৃঙ্খলিত না। তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সতর্ক নোটিশ দিতে পারে না। এটা দলের প্রধান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই পারেন।
বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষা ও লঙ্ঘনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মধ্যে সীমাবদ্ধ। গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারা মোতাবেক, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে লিপ্ত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। তবে, মহানগর আহ্বায়ক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সতর্কবার্তা বা বহিষ্কার করার ক্ষমতা নেই, এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কেবল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মধ্যে সীমাবদ্ধ।