দেশ বিদেশ
সরজমিন শোলধারা গ্রাম
বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠের সবুজ পাতার আড়ালে বাঙ্গি আর বাঙ্গি
রিপন আনসারী, মানিকগঞ্জ থেকে
১২ মে ২০২৫, সোমবার
বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে সবুজ পাতার আড়ালে আড়ালে শোভা পাচ্ছে সুস্বাদু বাঙ্গি আর বাঙ্গির মেলা। বাণিজ্যিকভাবে এখনো মানিকগঞ্জে বাঙ্গির চাষ শুরু না হলেও জেলার ঘিওর, শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। ওইসব অঞ্চলের বেলে-দোআঁশ মাটি বাঙ্গি চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় এ বছর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পাচ্ছে কৃষক।
সরজমিন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার শোলধারা গ্রামের ফসলের মাঠে দেখা গেছে, যতদূর চোখ যায় শুধু বাঙ্গি ক্ষেত। ছোট-বড় বাঙ্গি বিছিয়ে আছে সবুজ পাতার আড়ালে আড়ালে। বাঙ্গি ক্ষেত থেকে সুবাস ছড়ানোর পাশাপাশি খেতেও সুস্বাদু। ক্ষেত জুড়ে বিছানো বাঙ্গি দেখে যে কারোর চোখ জুড়িয়ে যাবে। সেখানকার কৃষকরা বাঙ্গি চাষ করে গর্ববোধ করেন। মধ্যে ফলন ভালো হওয়ায় তারা খুশি। শোলধারা গ্রামের চাষি আওয়াল হোসেন বলেন, এ বছর দেড় বিঘা জমিতে বাঙ্গির আবাদ করেছি। ফলন ভালো হওয়ায় বাঙ্গি চাষের উৎসাহ আরও বেড়ে গেছে। আগামী বছরগুলোতে আরও বেশি পরিসরে আবাদ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ বছর বাঙ্গি বিক্রি করে লাভবান হয়েছি।
একই গ্রামের বাবুল মিয়া বলেন, বিগত বছরগুলোর চাইতে এ বছর বাঙ্গির ফলন ভালো হয়েছে। আমার ক্ষেতের বাঙ্গির সাইজ বড়। একেকটির ওজন ৩-৫ কেজি পর্যন্ত হবে। প্রথম দিকে একটি বড় বাঙ্গি বিক্রি করেছি ৩০০ টাকার উপরে। এখনো দাম ভালো পাচ্ছি। এলাকার উকিল উদ্দিন মাতব্বর বলেন, কয়েক বছর ধরে আমাদের এলাকার কৃষকরা বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি বাঙ্গির আবাদ করে আসছে। ফলন ভালো হওয়ায় দিন দিন বাঙ্গি চাষে আগ্রহ বাড়ছে। আমি নিজেও ১ বিঘা জমিতে আবাদ করেছি। কৃষক তোমছের মিয়া ও তার তিন ছেলে মিলে প্রায় ৫ বিঘা জমিতে বাঙ্গির আবাদ করে লাখ টাকা বাঙ্গি বিক্রি করেছে। তারা জানান, অন্যান্য ফসলের সঙ্গে বাঙ্গির আবাদ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। চাষিরা জানান, এলাকায় দেড়শ’ পরিবার বাঙ্গি চাষ করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। এ গ্রামটি বাঙ্গি চাষের জন্য বিখ্যাত বলে তাদের দাবি। শুধু বাঙ্গি নয়, একই জমিতে পিয়াজসহ অন্যান্য ফসলও তারা আবাদ করে আসছে। এ কারণে তারা সবদিক থেকেই লাভবান হচ্ছেন। সামনের বছরগুলোতে তারা আরও বেশি পরিসরে বাঙ্গির আবাদ করবেন বলে জানান তারা। মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ঘিওর, শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলায় ২০ বিঘারও বেশি জমিতে বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। একই জমিতে অন্যান্য ফসলের সঙ্গে কৃষক বাঙ্গি চাষ করে আসছে। তবে, জেলায় এখনো বাণিজ্যিকভাবে বাঙ্গি চাষ শুরু হয়নি। ফলন ভালো হওয়ায় দিন দিন কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে বাঙ্গি চাষের ওপর। কৃষক যাতে আগামীতে উন্নত জাতের বাঙ্গির আবাদ করতে পারে সে বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সার্বিক সহযোগিতা করবে বলেও জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।