বাংলারজমিন
কুষ্টিয়ায় কাফনের কাপড় পরে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের কর্মসূচি
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
২ জুলাই ২০২৫, বুধবারদীর্ঘ ১৭ বছর পর কুষ্টিয়া পৌর বিএনপি দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনেকটা ঢাকঢোল পিটিয়েই অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রার্থীরা ও নির্বাচনের আগে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারণা চালিয়েছেন। গত শুক্রবার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ভোট পুনর্গণনা দাবি করেন পৌর বিএনপি’র পরাজিত নিকটতম সভাপতি প্রার্থী ও জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান (কাজল) মাজমাদার। নির্বাচন বাতিল ও জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কুতুবউদ্দিন আহমেদ এবং সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কোর্ট স্টেশন সংলগ্ন জেলা বিএনপি’র কার্যালয় ঘিরে প্রবেশ পথের সামনে অবস'ান নেন দলটির কয়েকশ’ নেতাকর্মী। এ সময় বেশ কয়েকজন কাফনের কাপড় পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় শুয়ে পড়েন। এতে দলীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তাসহ কার্যালয় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
বিক্ষোভকারীরা কুষ্টিয়া পৌর বিএনপি’র নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে নানা স্লোগান দেন। এ সময় ভোট কারচুপির জন্য জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কুতুবউদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারকে দায়ী করেন তারা। এ বিষয়ে কাজল মাজমাদার বলেন, জেলা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দকে ২৪ ঘণ্টা সময় দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে সমস্যার সমাধান না করলে আমরা হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। এর আগে ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করে গত রোববার কুষ্টিয়া এন এস রোডে একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলন চলাকালে সেখানে খবর পৌঁছায় কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রাবাসের টয়লেটে তার চেয়ার প্রতীকের সিলমারা বেশ কিছু ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। এ নিয়ে দুপুর থেকেই দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কাজল মাজমাদার বলেন, নির্বাচন ঘিরে জনমনে নানা সংশয় থাকলেও আমরা দলের বৃহত্তর স্বার্থে এবং গণতন্ত্রের অনুশীলনের জন্য অংশগ্রহণ করেছিলাম। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনকে বারবার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন' আমাদের আশঙ্কাকে সত্যি করে নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন সম্পন্ন করতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। কমিশন তাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছে ও নানামুখী বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। অনিয়ম ও ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং পুনরায় নির্বাচনের দাবি করছি। এর আগে গত শুক্রবার বিকালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বিকাল ৩টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এতে ২১টি ওয়ার্ডের মোট ভোটার ছিলেন ১৪৯১ জন। ভোটগ্রহণ শেষে রাত ১০টার দিকে ঘোষিত ফলাফলে একে বিশ্বাস বাবুকে সভাপতি ও কামাল উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। বিজয়ী সভাপতি একে বিশ্বাস বাবু পান ৬১১ ভোট। পরাজিত নিকটতম প্রার্থী আক্তারুজ্জামান ওরফে কাজল মাজমাদার পান ৫৯৫ ভোট। পরদিন শনিবার পুনর্গণনা শেষে চার ভোট বেড়ে কাজলের ভোটের সংখ্যা হয় ৫৯৯। এ বিষয়ে জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।