বাংলারজমিন
হ্যালো, আমি আশা এনজিও’র ম্যানেজার বলছি
ইমরান হোসেন সুজন, নবাবগঞ্জ থেকে
২ জুলাই ২০২৫, বুধবারগত ১৬ই জুন। সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টা। ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নতুন বান্দুরা বাজারের দুই ব্যবসায়ী মো. ফরিদ ও অহিদুল ইসলাম বাবু বসে গল্প করছিলেন। এ সময় ফরিদের মোবাইলের রিংটোন বেজে ওঠে। ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে বলে, হ্যালো, ফরিদ সাহেব। আমি আশা এনজিও’র ম্যানেজার বলছি। অপর প্রান্ত থেকে নিজের নাম শুনতে পেয়ে ফরিদও বিশ্বাস করে নেন তিনি আশা এনজি’র ম্যানেজার। ওই ব্যক্তি ফরিদকে নগদে ২৪ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। ফরিদ তখন বিকাশের ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন জানিয়ে ফোন ধরিয়ে দেন পাশে বসে থাকা আরেক ব্যবসায়ী অহিদুল ইসলাম বাবুকে। তখন ওই ব্যক্তি বাবুকে জানান তিনি বিকাশে ২৪ হাজার টাকা পাঠাবেন। বিনিময়ে তার নগদে ওই টাকাটা সেন্ডমানি করতে হবে। এরপর ভুয়া মেসেজ পেয়ে চেক না করেই ওই ব্যক্তির নম্বরে ২৪ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন ব্যবসায়ী বাবু। পরে বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
ব্যবসায়ী বাবু বলেন, ফোনে কথা বলতে বলতেই দেখি আমার বিকাশ নম্বরে ২৪ হাজার ৪৮০ টাকার একটি সেন্ডমানির মেসেজ এসেছে। আমি মেসেজটি ভালোভাবে চেক না করে তার নগদে (০১৬০০৪২৫২০১) ২৪ হাজার টাকা সেন্ডমানি করে দেই। পরবর্তীতে বিকাশের ব্যালেন্স চেক করে দেখি আমার অ্যাকাউন্টে কোনো টাকাই যোগ হয়নি। তখন মেসেজটি ভালোভাবে দেখে বুঝতে পারি আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি। এ ঘটনায় নবাবগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তিনি বলেন, পরদিন বাজারের আরেক বিকাশ ব্যবসায়ী রাজীব সাহাকে একই ফাঁদে ফেলে চক্রটি। তার নগদে টাকা থাকায় তিনি লোক মারফত আমার কাছে টাকা পাঠাতে আসেন। তবে ঘটনা বুঝতে পেরে আমি ওই নম্বরে আর টাকা পাঠাইনি।
প্রতারণার টার্গেট হন বাজারের আরেক ব্যবসায়ী রাজীব সাহা। তিনি বলেন, ১৪ই জুন সন্ধ্যায় আমার পাশের দোকানদার প্রণব বণিকের মোবাইলে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আমার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি নিজেকে আশা এনজিও’র ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে আমার বিকাশ নম্বর চায়, আমি তাকে নম্বর দিলে তিনি ২৪ হাজার ৪৮০ টাকার একটি সেন্ডমানি করেন ওই নম্বরে। আমার নগদে টাকা না থাকায় মেসেজ পেয়ে প্রণব সাহাকে ২৪ হাজার টাকা ক্যাশ বুঝিয়ে দিয়ে অন্য দোকান থেকে নগদে টাকাটা পাঠাতে বলি। পরবর্তীতে আমি মেসেজ দেখে নিশ্চিত হই ভুয়া মেসেজ পাঠিয়ে আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তবে ব্যবসায়ী বাবু ভাইয়ের বুদ্ধিমত্তায় আমি টাকা ফেরত পেয়েছি। এ ব্যাপারে দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম বলেন, অভিযোগ পেয়ে প্রতারক চক্রটিকে ধরতে প্রশাসন কাজ করছে। এ সময় তিনি ব্যবসায়ীদের লেনদেনে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান।