দেশ বিদেশ
চালের দাম কমলেও বেড়েছে সবজি-মুরগি ডিম
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১০ মে ২০২৫, শনিবার
দেশের বিভিন্ন জেলায় বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। বাজারে নতুন চাল পাওয়া যাচ্ছে। ফলে দাম কমেছে সরু তথা মিনিকেট চালের। গত দুই সপ্তাহে ধরনভেদে এই চালের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা কমেছে। তবে চালের দাম কমলেও বাজারে সবজি, ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডায়মন্ড, মঞ্জুর, রশিদ প্রভৃতি ব্র্যান্ডের নতুন মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৭৫ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগেও এই চালের কেজি ৮৮ থেকে ৯০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে অন্যান্য চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে রোজার ঈদের পর বাড়তে শুরু করে সবজির দাম। কমদামি সবজি হিসেবে পরিচিত প্রতি কেজি পেঁপে এখন ৮০ টাকা। ব্যবসায়ীদের দাবি সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজারে বেশির ভাগ সবজির দামই ৮০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দামে হেরফের না হলেও ডিমের দাম বেড়েছে ডজনে ৫ টাকা।
বাজারে দোকানে শাক-সবজি সাজাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতার সংখ্যা কম। পেঁপের দাম কতো জানতে চাইলে সবজি বিক্রেতা হাসান বলেন, মাত্র ৮০ টাকা। এখন পেঁপের সরবরাহ খুব কম। পাইকারি বাজারেও দাম বেশি। বর্ষা শুরু হলে দাম কিছুটা কমে যাবে। আরেক বিক্রেতা বলেন, দাম বাড়ায় পেঁপের ক্রেতাও কমে গেছে। এখন পেঁপের মৌসুম না। ঢাকায় পেঁপে আসছে কম।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৭০-৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। প্রতি কেজি পটোল ৭০-৮০ টাকা, কাঁকরোল ৯০-১০০ টাকা, টমেটো মানভেদে ৪০-৫০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, দেশি শসা ৮০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকা, লম্বা লাউ প্রতি পিস ৭০-৯০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচুরমুখি প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকা, প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচকলার হালি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, শজনে ডাঁটা কেজি ১৫০-১৬০ টাকা। প্রতি কেজি চিচিঙা ৬০-৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, দেশি পিয়াজ মানভেদে প্রতি কেজি ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু ২৫-৩০ টাকা, দেশি নতুন রসুন ১৪০-১৬০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২২০-২৪০ টাকা, চিনি ১২০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০-১১৫ টাকা, দেশি চিকন মসুর ডাল ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রতি ডজন ডিম ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিরপুর ১১ নম্বর কাঁচাবাজারে ডিম ব্যবসায়ী সবুজ আহমেদ বলেন, দাম একটু বেশি, আমরা বেশি দামে ডিম কিনছি এখন।
ডিম কিনতে আসা খায়রুল ইসলাম বলেন, অনেক দিন ধরে শুনছি ডিম বাজারে আসবে না। বন্ধ হয়ে যাবে। দুই সপ্তাহ আগে ডিম কিনেছি। তখন ১৩০ টাকা ডজন পড়েছে। আজ কিনলাম ১৪৫ টাকায়।
আরেক ক্রেতা বলেন, নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বেশি রাখছে। ক্রেতারা অসহায়। দুনিয়ার যেখানে যুদ্ধ হোক বাংলাদেশ পণ্যের দাম বাড়ে। ভারত-পাকিস্তানে যুদ্ধ লেগে গেলেও এর ব্যতিক্রম হবে না।
তবে ডিমের দাম বাড়লেও মুরগির দাম স্থিতিশীল। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭০-১৮০ টাকা এবং সোনালি মুরগি মানভেদে ২৮০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের মধ্যে প্রতি কেজি চাষের কই ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।