বাংলারজমিন
নবীগঞ্জ শহরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট
স্টাফ রিপোর্টার, নবীগঞ্জ থেকে
৬ জুলাই ২০২৫, রবিবারনবীগঞ্জে গত দু’দিন ধরে শহরের নতুন বাজার মোড়ে সংঘর্ষের জের হিসেবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। হামলা, ভাঙচুরে ১০-১৫ লাখ টাকার ক্ষতির দাবি করেছে ব্যবসায়ীরা। নবগঠিত মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের তরফে ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ আদায়ের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নবীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতি না থাকায় শহর জনপদে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গুজব ছড়িয়ে শহরের আনমনু ও তিমিরপুর গ্রামের সংঘাতকে উস্কে দিচ্ছে বিশেষ একটি চক্র। শুক্রবার রাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে পরিস্থিতি শান্ত হলেও শহরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্ধেগ, উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলাকালে মোটরসাইকেল, টমটমসহ অনেকগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর হয়। ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মুনসুরপুর গ্রামের সাংবাদিক আশাহিদ আলীর সঙ্গে সাংবাদিক সেলিম তালুকদারের বিরোধকে কেন্দ্র করেই সংঘাতের সূচনা। গুজব আর গুঞ্জনে বিভ্রান্ত শহরের আনমনু ও তিমিরপুর গ্রাম। আশাহিদ ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা। তার সঙ্গে রয়েছে আনমনু গ্রামের বাদল মিয়া। বাদল এবং সেলিম তালুকদারের বিরোধও মামলায় গড়িয়েছে। বিদ্যমান সংঘাত নিয়ে শুক্রবার বিকালে নবীগঞ্জ থানায় শালিসের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পরই ফের শহরে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব আহমেদসহ ২ জন আহত হয়। বৃহস্পতিবার নতুন বাজার ট্রাফিক পয়েন্টে আশাহিদ আলীর সঙ্গে সেলিম তালুকদার সমর্থিত তিমিরপুর গ্রামের খরছু মিয়ার বাকবিতণ্ডা হয়। একপযার্য়ে আশাহিদ দৌড়ে গিয়ে একটি দোকানে আশ্রয় নেয়। হামলাকারী লোকজন আনমনু গ্রামের ওই দোকান থেকে তাকে ছিনিয়ে আনার চেষ্টা করে। এ সময় আশাহিদের সঙ্গে থাকা আনমনু গ্রামের বাদল আশাহিদের পক্ষে অবস্থান নেয়। এ সময় তিমিরপুর গ্রামের দুই কিশোরকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়। আনমনু গ্রামবাসীর অভিযোগ অন্যায়ভাবে তাদেরকে ঘটনার সঙ্গে জড়ানো হচ্ছে। অপরদিকে তিমিরপুর গ্রামের দাবি আওয়ামী সরকারের দৃশ্যমান দোসর ইনাতগঞ্জ এলাকা থেকে পলাতক আশাহিদের বিভিন্ন অপকর্ম আড়াল করতেই তাকে নিয়ে বিশেষ একটি মহল অরাজকতার আশ্রয় নিয়েছে। উত্তেজনা নিরসনে জামায়াত এমপি প্রার্থী শাহজাহান আলী, উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক সরফরাজ আহমদ, গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা আবুল হোসেন জীবন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব আহমদ শালিস প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নেন। থানায় আটক তিমিরপুর গ্রামের দুই কিশোরকে ছেড়ে দেয়া হয়। থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঘটনার নেপথ্যের উৎস খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। সার্বিক ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে। ওদিকে, শহরের ভাঙচুরকৃত বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা ভিডিও ক্লিপ দেখে দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।