বাংলারজমিন
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৪ দালাল আটক
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবারময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে রোগীদের হয়রানি ও জিম্মি করে প্রতারণার অভিযোগে দালাল চক্রের ১৪ সদস্যকে আটক করেছে র্যাব। গতকাল তাদেরকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম। তাদের সর্বনিম্ন ১৫ দিন এবং সর্বোচ্চ ২ মাস মেয়াদে সাজা দেন তিনি। আটককৃতরা সবাই বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিহ্নিত দালাল বলে জানান স্থানীয়রা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-১৪ এর একটি দল। অভিযানে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, মহিলা ওয়ার্ড, পরীক্ষাগার, আউটডোরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ১৪ দালালকে হাতেনাতে আটক করে। পরে তাদের সঙ্গে থাকা ১৪টি মোবাইল জব্দ করা হয়। আটককৃতরা হলো- মন্টু মিয়া (২৫), মো. মাসুদ (৪৫), আলাল উদ্দিন (৬০), মো. আশরাফুল (২৭), মো. বিজয় (৫০), মো. আকাশ (২৪), ছোবহান মিয়া (৬৫), সুমন মিয়া (৩০), শাহাদাত হোসেন বাবু (৩০), মো. শাকিব (২৪), আনিছ হোসেন রকি (৩৫), সাদ্দাম হোসেন (২৯), মমিনুল ইসলাম রবিন (৩০) এবং রোকসানা আক্তার (৩৫)।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের দালাল-প্রতারক চক্রকে ধরতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লিখিত আবেদন জানানোর পর এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। চক্রটি নানাভাবে রোগী এবং তাদের স্বজনদের হয়রানি করে আসছিল। এই চক্রের ১৪ জনকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। জনস্বার্থে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে। ময়মনসিংহ র্যাব-১৪’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুজ্জামান বলেন, আটককৃতরা হাসপাতালটিকে চারদিকে ব্লক করে রেখেছিল। গ্রামাঞ্চল থেকে রোগী আসলে তাদের টার্গেট করে হয়রানির মধ্যে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিতো। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে রোগী ও স্বজনদের বেকায়দায় ফেলতো।
গৌরীপুর থেকে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা শামীম আহমেদ বলেন, সপ্তাহখানেক আগে স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির উদ্দেশ্যে আসি। পরে একজন দালালের খপ্পরে পড়ে বেসকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হই। এতে আমার ২০ হাজার টাকা খোয়া যায়। যা কোনো কাজে আসেনি। এমন অভিযান প্রতি সপ্তাহে দরকার। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, এক হাজার শয্যার বিপরীতে হাসপাতালে রোগী ভর্তি থাকে সাড়ে ৩-৪ হাজার। যাদের বেশির ভাগ সেবা নিতে এসে বিভিন্ন সময় দালালদের খপ্পরে পড়ে। এই অভিযানের ফলে দালালদের দৌরাত্ম্য কিছুটা হলেও কমবে।