দেশ বিদেশ
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগ
দুদকের জালে লিটন ও শাহরিয়ার
ডালিম হোসেন শান্ত, রাজশাহী থেকে
২৯ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার
পতিত আওয়ামী স্বৈরশাসনের পুরো আমল জুড়ে রাজশাহীর রাজনীতিতে প্রভাবশালী মেয়র ও মন্ত্রী ছিলেন খায়রুজ্জামান লিটন ও শাহরিয়ার আলম। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে গড়েছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। দেশে-বিদেশে নামে-বেনামে গড়েছেন সম্পদ। সম্প্রতি তাদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধানে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থ পাচারের মতো গুরুতর অপরাধের তথ্য মিলেছে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন এবং সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রাজশাহী-৬ বাঘা-চারঘাটের সাবেক এমপি শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সম্প্রতি এক বিফ্রিংয়ে জানান, শাহরিয়ার আলম সরকারি পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মোট ২৭ কোটি ৩৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫৮৫ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা ভোগ দখলে রেখেছেন।
এ ছাড়া তার নামে ৬টি ব্যাংক হিসাবে মোট ২৬০ কোটি ৯৪ লাখ ৯৬ হাজার ৭৩০ টাকা ৬০ পয়সার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে খায়রুজ্জামান লিটন এবং তার স্ত্রী-কন্যার বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রায় ২৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এ মামলা করা হয়। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর থেকেই সপরিবারে আত্মগোপনে আছেন লিটন। মামলাসূত্রে জানা যায়, প্রথম মামলায় লিটনের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৪ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া তার নামে থাকা ১২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৫২ কোটি ২৩ লাখ ১৭ হাজার ২৫১ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। দ্বিতীয় মামলায় লিটনের স্ত্রী শাহীন আকতারের সঙ্গে লিটনকেও আসামি করা হয়েছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, শাহীন আকতার তার স্বামীর সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১১ কোটি ৪১ লাখ ৬২ হাজার ২৪৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নামে থাকা ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৭৬ কোটি ২৯ লাখ ৭৮ হাজার ৮০২ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। তৃতীয় মামলায় লিটনের সঙ্গে আসামি হয়েছেন তার মেয়ে আনিকা ফারিহা জামান। আনিকার বিরুদ্ধে বাবার সহযোগিতায় দুর্নীতির মাধ্যমে ৬ কোটি ৮০ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮১ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া তার নামে থাকা ৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ৫৭৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।