দেশ বিদেশ
ঈদে যাত্রীপ্রতি বাড়তি ভাড়া দাবি বাস মালিকদের
স্টাফ রিপোর্টার
১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবারঈদযাত্রায় জনপ্রতি ২০০ টাকা করে বেশি ভাড়া আদায়ের দাবি করেছে বাস মালিকরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, তারা স্থায়ী ভাড়া বৃদ্ধির দাবি করছেন না। ঈদের আগে ৭ দিন ও ঈদের পরে ৭ দিন যাত্রীপ্রতি ২০০ টাকা বৃদ্ধি করার দাবি জানাচ্ছেন। কোনো বাস যদি ঢাকা থেকে যাত্রী বোঝাই করে খুলনা নিয়ে যায়, তবে আসার সময় একজন যাত্রীকেও আনতে পারে না। সেক্ষেত্রে যদি মালিকদের এমন লস দিতে হয়, তাহলে একটি বাস ঈদের আগে যাবে এবং ঈদের পরে ছাড়া আসতে পারবে না। গতকাল বিদ্যুৎ ভবনে ঈদ উপলক্ষে আয়োজিত অংশীজন সভায় এ দাবি জানান বাস মালিকরা। তবে তাদের দাবি মেনে নেয়নি সরকার। সভায় সিদ্ধান্ত হয় ঈদের আগে ও পরে সায়েদাবাদ, মহাখালী, গাবতলী ও ফুলবাড়ীয়া বাস টার্মিনালসহ দেশের সব বাস টার্মিনালে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং অতিরিক্ত মালামাল/যাত্রী পরিবহন না করার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে এবং এ লক্ষ্যে বিআরটিএ, ডিএমপি, সিটি করপোরেশন এবং মালিক-শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধির সমন্বয়ে পৃথক ভিজিলেন্স টিম এবং মনিটরিং টিম গঠন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম বলেন, ঈদে একমুখী যাত্রী হয়ে যায়। আমাদের হিসাব হচ্ছে বাসে যদি ৭৫ শতাংশ যাত্রী হয়, সেক্ষেত্রে ১০ শতাংশ লাভ হয়। কিন্তু ফেরার পথে ২৫ শতাংশ যাত্রী হলেও তাতে লস হয়। এ কারণে সব নির্দেশনা দেয়ার পরও ওই সময়ে এই কাজ (অতিরিক্ত ভাড়া আদায়) করা হয়ে থাকে। যেমন- একমুখী যাত্রার বিষয়ে বিমান বেশি ভাড়া নিয়ে খরচ পুষিয়ে থাকে। আমরা সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব দিয়েছি ঈদের বিশেষ দিনগুলোতে যদি বাড়তি ভাড়া ধরে দেয়া যায় তাহলে এটি রোধ করা সম্ভব হবে।
সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ভাড়ার বিষয়টি আমরা ঈদের পরে দেখবো। সভায় উপস্থিত বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-ময়মনসিংহ সহ অনেক রুটে ঈদের সময়ও উভয়মুখী যাত্রী হয়। এ বিষয়ে একটি সমীক্ষার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি।
ঈদে যাত্রীবাহী বিশেষ ট্রেন চলবে ১০টি: এদিকে, ঈদুল আজহায় যাত্রীদের জন্য ১০টি বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এসব ট্রেন ঈদের আগে ও পরে ৯ দিন চলাচল করবে। এ তথ্য জানিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভ্রমণ সুবিধার্থে বাড়তি ৫ জোড়া অর্থাৎ ১০টি বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হবে। এ সময় নিয়মিত আন্তঃনগর ট্রেনগুলো আগের মতোই চলবে।
ঈদে ১৩ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে সিএনজি স্টেশন: ওদিকে আসন্ন ঈদুল আজহার আগে-পরে ১৩ দিন ২৪ ঘণ্টা সেবা দেবে সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো। ঈদের দিনসহ আগের সাতদিন ও পরের পাঁচদিন সার্বক্ষণিক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাছাড়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঈদুল আজহা উপলক্ষে যাত্রীসাধারণের পারাপারের নিমিত্তে পর্যাপ্ত ফেরির ব্যবস্থা রাখা এবং কমলাপুর এলাকার টিটিপাড়া আন্ডারপাসসহ সড়কটি আগামী ২০শে মে’র মধ্যে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে এমআরটি, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণসহ ওয়াসা, ডেসকো, ডিইএসএ/ডিপিডিসি, তিতাস, টেলিফোন ইত্যাদির জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ বন্ধ রাখতে হবে।
সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক, সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ উপস্থিত ছিলেন।