বাংলারজমিন
আমরা পুরনো খেলায় নতুন প্লেয়ার হতে আসিনি
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, বগুড়া থেকে
৬ জুলাই ২০২৫, রবিবার
এই বগুড়ায় কোনো দলবাজ পুলিশ বা দলবাজ প্রশাসনের স্থান হবে না। আমরা পুরনো খেলায় নতুন প্লেয়ার হতে আসিনি। আমরা রাজনীতির নিয়ম বদলাতে এসেছি। গতকাল দুপুরে পদযাত্রা শেষে বগুড়ার সাতমাথার অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সমাবেশে নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে বগুড়াবাসীর প্রতি ফ্যাসিস্ট সরকারের রাজনৈতিক বৈষম্যের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে ১৬ বছর ধরে বগুড়াবাসী চরম রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার হয়েছে। বগুড়ার নাম শুনলে কোনো চাকরিতে নেয়া হতো না, এমনকি কোথাও জায়গা দেয়া হতো না। বগুড়াবাসীকে মিথ্যা মামলায় জর্জড়িত করা হয়েছিল। নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, এই বৈষম্য থেকেই বিপ্লবের সূত্রপাত হয়েছিল। বর্তমানে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়ে তিনি বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশে সবাইকে সমান গুরুত্ব দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা আর কোনো বৈষম্য চাই না। প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি সমাবেশে বগুড়ার প্রশাসনের নিরপেক্ষ আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ২৪’র গণ-অভ্যুত্থানের পরে আমাদের দাবি ছিল নিরপেক্ষ প্রশাসন। কিন্তু যদি কেউ সেই পুরনো কায়দায় দলবাজ প্রশাসনের মতো আচরণ করে, তাহলে তাদের পরিণতিও ফ্যাসিস্ট মুজিবাদীদের মতোই হবে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যারা ভোট ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের পরিণতি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। গণ-অভ্যুত্থানের এক বছরের মধ্যেই যদি আপনারা ছাত্র-জনতার ক্ষমতার কথা ভুলে যান, তাহলে ভুল করছেন। সাবধান হয়ে যান। সাতমাথার এই গণসমাবেশে নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে স্পষ্টতই বগুড়াবাসীর প্রতি বৈষম্যের ইতিহাস এবং ভবিষ্যতে একটি সমান অধিকার ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন ফুটে উঠেছে। প্রশাসনের নিরপেক্ষতার দাবি এবং দলবাজদের বিরুদ্ধে তার সতর্কবার্তা বগুড়ার জনগণের কাছে নতুন আশার বার্তা বহন করেছে।
এর আগে বগুড়ায় পর্যটন মোটেলে এক অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এ সময় তিনি জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা জানি, আপনাদের পরিবারের যে ক্ষতি হয়েছে, পৃথিবীর যা কিছুই দেয়া হোক, সেই ক্ষতি পূরণ হবে না। আপনাদের পরিবারের সদস্যরা দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন।
মানুষের মুক্তির জন্য শহীদ হয়েছেন, স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছেন। ফেরাউন চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। স্বৈরশাসকদের কখনো না কখনো পতন হয়। এবারো সেই ফেরাউনের পতন হয়েছে। আমরা এখন চাই, যে কারণে শহীদরা শাহাদতবরণ করলেন, একটা স্বাধীন দেশ যেখানে স্বৈরাচার থাকবে না, সেরকম একটা দেশ গঠন করবো। সেটার জন্য আমাদের আরও সংগ্রাম করতে হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)’র সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাকিব মাহাদীসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতৃবৃন্দ।