দেশ বিদেশ
মানুষ আর কতো জীবন দেবে: নজরুল ইসলাম
স্টাফ রিপোর্টার
৬ জুলাই ২০২৫, রবিবারদেশের আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দেশের মানুষ ভাষা আন্দোলনে জীবন দিয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে, ’৯০-এর ছাত্র আন্দোলন, ’২৪-এর জুলাই-আগস্টের আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে জীবন দিয়েছে। আর কতো জীবন দেবে এদেশের মানুষ, আর কতো লড়াই করবে। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫ কতোটুকু সুরক্ষা দেয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আর কতো জীবন দেবে এ দেশের মানুষ, আর কতো লড়াই করবে। মানুষ প্রাইমারি স্কুল থেকে হাইস্কুলে উঠে, হাইস্কুল থেকে কলেজে যায়, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, আস্তে আস্তে মানুষ উন্নত হয়। আস্তে আস্তে মানুষের পরিবর্তন হয়, ইতিবাচক পরিবর্তন। আর আমরা বারবার যেন সাপ-লুডুর মতো অনেকদূর আগে যাই আবার সাপে কেটে নিচে চলে আসি, আবার আগানোর চেষ্টা করি, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এত জীবন দেয়ার পর এখনো অসঙ্গতি নিয়ে আলোচনা হয়, এটা কেন হবে?
তিনি বলেন, যা যা পরিবর্তন করা প্রয়োজন ছিল, সেটা এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে অর্জিত হয়নি। এই অধ্যাদেশে অতীতে যারা শাস্তি পেয়েছেন, তারা মুক্তি পাবেন। কিন্তু ঘুরে-ফিরে ওই একই বিধান আরেক জায়গায় রাখা হয়েছে, যাতে একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেয়া হবে। এর চেয়ে বড় অযৌক্তিক বিষয় আর কী হতে পারে। অধ্যাদেশের বিধানে অস্পষ্টতা আছে। আইনে অস্পষ্টতার সুযোগে যারা আইন প্রয়োগ করে, তারা জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়। আইনে যদি অস্পষ্টতা থাকে এবং জনগণ হয়রানির শিকার হয় তাহলে সে অস্পষ্টতা দূর করার কর্তব্য যারা আইন করেন তাদের।
নজরুল ইসলাম বলেন, যারা আইনের অপব্যবহার করে এবং ব্যত্যয় ঘটিয়ে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়, তাদের শাস্তির বিধান ও জবাবদিহির বিধানও থাকা উচিত। বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড চলে ঐকমত্য কমিশনে। সেখানে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও এই সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নিয়ে আলোচনা নেই।
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ৩৫ ধারার বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের বিধানের সমালোচনা করে সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যদিও সরকার বলছে বিধানটি আগের মতো উন্মুক্ত নয়, সংকুচিত করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কোনো সীমাবদ্ধতায় থাকে না। যে আইন নেই, তার ওপরও পুলিশ কাজ করে। এই অধ্যাদেশ রাখা যাবে না। সেমিনারে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-সমন্বয়ক ফাহিম মাশুরুর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রধান সমন্বয়ক আকরাম হুসাইন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া, সেমিনারে মূল বক্তব্য পাঠ করেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার।