দেশ বিদেশ
চিন্ময়ের বিরুদ্ধে হেফাজতকর্মীকে হত্যাচেষ্টার মামলা
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
৯ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবাররাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আদালতে হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন এক হেফাজতকর্মী। মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীকে প্রধান আসামি করে ১৬৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়।
গতকাল দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১ মো. আবু বকর ছিদ্দিকের আদালতে হেফাজতকর্মী ব্যবসায়ী এনামুল হক বাদী হয়ে এ মামলার আবেদন করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আদেশের অপেক্ষায় রেখেছেন। মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের একজন সমর্থক। গত ২৬শে নভেম্বর তিনি জমি রেজিস্ট্রির কাজে আদালতে যান। সেখান থেকে বাসায় ফেরার পথে চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর অনুসারীরা ‘একটা দুইটা মুসলিম ধর, ধরে ধরে জবাই কর’ বলে সেøাগান দিচ্ছিলেন। বাদীর পরনে পাঞ্জাবি এবং টুপি থাকায় ‘মোল্লাকে জবাই কর’ বলে তার ওপর হামলা করে বিক্ষোভকারীরা। হামলায় তিনি তার ডান হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং মাথায় কিরিচ দিয়ে কোপ দেয়া হয়। এরপর আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট শামসুল আলম জানান, আদালত মামলার আবেদন শোনার পর তা গ্রহণ করেছেন। মামলাটি আদেশের অপেক্ষায় রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৫শে নভেম্বর চট্টগ্রামে ফেরার পথে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওইদিন কোতোয়ালি থানায় হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। তখন চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজনভ্যান আটকে দেন। তারা এ সময় প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লাঠিপেটা করে ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। পরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে প্রবেশপথের বিপরীতে রঙ্গম সিনেমা হল গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে চিন্ময় সমর্থক উচ্ছৃঙ্খল ইসকন কর্মীরা। এই ঘটনায় পরে আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধাদানের অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মোট তিনটি মামলা করেছে। এতে ৭৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১,৩০০ জনকে আসামি করা হয়।
এ ছাড়া গত শনিবার নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন। পাশাপাশি আলিফের ভাই খানে আলম বাদী হয়ে যানবাহন ভাঙচুর ও জনসাধারণের ওপর হামলার ঘটনায় ১১৬ জনকে আসামি করে বিস্ফোরক আইনে আরেকটি মামলা করেছেন।