বাংলারজমিন
যুক্তরাজ্য পাঠানোর নামে ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার
সিলেটে যুক্তরাজ্য পাঠানোর নামে ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। স্ট্যাম্পে লিখে ২ লাখ করে ১২ লাখ এবং পরে কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়া আরও ৪৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক। বিনিময়ে ওই প্রতারক হোয়াটসঅ্যাপে গ্রাফিক্সের মাধ্যমে এডিট করে পাসপোর্টে ভুয়া ভিসা সেঁটে ভুক্তভোগীদের কাছে পাঠায়। এতে ভেঙে যায় ওই ৬ জনের ইউরোপের স্বপ্ন। প্রতারণার বিষয়টি ধরতে পেরে প্রতারকের কাছে বার বার ধর্ণা দিয়েও টাকা উদ্ধার করতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা। বাধ্য হয়ে সমপ্রতি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা। মঙ্গলবার সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর এলাকার বাসিন্দা এস কে আজাদ আমিন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন- সিলেট মহানগরের কুয়ারপাড় এলাকার ইঙ্গুলাল রোডের ৩৭নং বাসার বাসিন্দা সৈয়দ সাইফুর রহমানের ছেলে সৈয়দ উবায়দুর রহমান ২০২২ সালে আজাদ আমিন ও তার আরও ৫ আত্মীয়কে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যুক্তরাজ্য পাঠানোর লোভ দেখান। এ সময় প্রথম পর্যায়ে তিনি ৬ জনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা করে ১২ লাখ টাকা নেন এবং এ বিষয়ে একটি লিখিত স্ট্যাম্পও করেন। কিন্তু ওই সময় উবায়দুর মৌখিকভাবে এই ৬ জনকে বলেন- ভিসা হওয়ার পরই আরও ৮ লাখ করে দিতে হবে এবং এসব টাকা নগদ হাতে হাতে প্রদান করতে হবে।
তার মূল বাড়ি ওসমানীনগরে হওয়ায় যুক্তরাজ্য যেতে ইচ্ছুকরা সরল বিশ্বাসে উবায়দুরের হাতে বাকি টাকা তুলে দেন। তবে এর আগে গ্রাফিক্সের মাধ্যমে এডিট করে পাসপোর্টে ভুয়া ভিসা সেঁটে এই ছবি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান তিনি। এটি দেখে বিশ্বাস করেই ওই ৬ জন তার হাতে টাকা তুলে দেন। কিন্তু পরবর্তীতে পাসপোর্ট তার হাতে রেখে ওই ৬ জনের যুক্তরাজ্য যাওয়ার তারিখ নিয়ে নানা টালবাহানা করতে থাকেন। একপর্যায়ে কুরিয়ার সার্ভিসে ৬ জনের পাসপোর্ট পাঠালে ভুক্তভোগীরা হাতে পেয়ে দেখেন- পাসপোর্টে কোনো ভিসা লাগানো নেই। তখন প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে এবং উবায়দুরের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানতে চান। তখন তিনি নানা মিথ্যা গল্প বলেন। তবে পরবর্তীতে টাকা ফিরিয়ে দিবেন বললেও এখন পর্যন্ত কোনো টাকা প্রদান করেননি। এমনকি ১২ লাখ টাকার কয়েকটি ব্যাংক-চেক দিলেও এসব অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা ছিল না। ফলে চেকগুলো ফেরত আসে। এই অবস্থায় বাধ্য হয়ে সমপ্রতি ভুক্তভোগী আজাদ আমিন বাদী হয়ে উবায়দুরের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা এবং আরেকটি চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করেন। আজাদ জানান- প্রায় ১ বছর ধরে উবায়দুল পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বাসায় গিয়ে তাকে পাওয়া যায় না।