বাংলারজমিন
বরগুনায় ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে
বরগুনা প্রতিনিধি
৮ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবারবরগুনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে পাথরঘাটা উপজেলার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম (৩৫) বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ এবং বেতাগী উপজেলার বাসিন্দা শেফালী বেগম পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ নিয়ে জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০ জনে। এছাড়া নতুন করে আরও ৬৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫২২ জন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় ৪৬ জন, পাথরঘাটা উপজেলায় ১১ জন, বামনা উপজেলায় ৩ জন এবং আমতলী, তালতলী ও বেতাগী উপজেলায় একজন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ২০৬ জন। এদের মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৪৫ জন। জেলায় মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের মধ্যে সদর উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১১৬ জন, তালতলী উপজেলায় ৫৫ জন, বামনা উপজেলায় ১০৬ জন, বেতাগী উপজেলায় ৩৬ জন, আমতলী উপজেলায় ৪৩ জন এবং পাথরঘাটা উপজেলায় ১৬৬ জন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বরগুনায় সচেতনতার অভাব, সময়মতো রোগ নির্ণয়ের ঘাটতি এবং চিকিৎসা সুবিধার সীমাবদ্ধতা ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। অন্যদিকে জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ৩০ জনের মধ্যে ২৪ জনের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায়, চারজনের বাড়ি বেতাগী উপজেলায় এবং দুই জনের বাড়ি পাথরঘাটা উপজেলায়।
ডেঙ্গু নিয়ে বরগুনাবাসীর মধ্যে বাড়ছে হতাশা ও আতঙ্ক। মানুষ বলছে ডেঙ্গু এখন আর শুধু মৌসুমি রোগ নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে জীবননাশকারী এক দুর্যোগ। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, ডেঙ্গু রোগীর চাপ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিনিয়ত রোগী আসছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি চিকিৎসা দিতে, তবে পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হচ্ছে। এ বিষয়ে বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, যত দিন যাচ্ছে, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ততই বাড়ছে। কিছুতেই তা নিয়ন্ত্রণে আসছে না। জনগণের সচেতনতার পাশাপাশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও ব্যাপক মশক নিধন কার্যক্রম ছাড়া এই পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব নয়। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা উদ্বেগ ও আশঙ্কাজনক। এ পরিস্থিতি থেকে বেরুতে হবে। চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ জরুরি।