ঢাকা, ২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২২ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

৪৩ মাসে ৮ কোটি টাকা বেতন বকেয়া

পৌর ভবনের ফটকে তালা দিয়ে কর্মচারীদের কর্মবিরতি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার

প্রায় ৪৩ মাসের বকেয়া বেতন প্রায় আট কোটি টাকা। বেতন-ভাতা পরিশোধে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বৈষম্য দূরীকরণ এবং সম্প্রতি বদলিকৃত এক প্রকৌশলীর গ্র্যাচুইটি ভাতা বন্ধের দাবিতে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন কুষ্টিয়ার প্রথম শ্রেণির কুমারখালী পৌরসভার কর্মচারীরা। সোমবার সকাল ১০টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন তারা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত একমাসের বেতন পরিশোধ করা না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এদিকে, ফটকে তালা লাগিয়ে কর্মবিরতি পালন করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। তারা পৌরসভায় এসে ফিরে যাচ্ছেন সেবা না পেয়ে। 
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে কর্মচারীরা। ফটকে ঝুলছে তালা। এ সময় কুমারখালী পৌর কর্মচারী সংসদের সভাপতি ও পৌরসভার প্রধান সহকারী রাজু আহমেদ বলেন, ৫২ জন কর্মচারীর ৪৩ মাসের প্রায় আট কোটি টাকা বেতন বকেয়া। তা পরিশোধের কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ সম্প্রতি বদলিকৃত প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামানের প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা গ্র্যাচুইটি ভাতা পরিশোধের জন্য চেক প্রস্তুত করা হয়েছে। পৌরসভার ইতিহাসে কোনোদিন কারও গ্র্যাচুইটি ভাতা দেয়ার ঘটনা নেই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে কর্মবিরতি পালন করছি। তার ভাষ্য, বদলিকৃত প্রকৌশলীর গ্র্যাচুইটি ভাতা বন্ধ এবং আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একমাসের বেতন পরিশোধ করা না হলে কঠোর আন্দোলন করা হবে।

বাংলাদেশ পৌর কর্মচারী সংসদের সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান টুটুল বলেন, বছরের পর বছর কর্মচারীদের বেতন বকেয়া। তারা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। অথচ কর্মকর্তারা বেতন-ভাতা নিয়ে উৎসব করছেন। সুতরাং একই কার্যালয়ে দুই নিয়ম চলতে পারে না। এই বৈষম্য দূর করে দ্রুত বেতন পরিশোধের দাবি জানায়। জানা গেছে, ইতিপূর্বে কুমারখালী পৌরসভায় কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর গ্র্যাচুইটি ভাতা পরিশোধ করা হয়নি। অথচ হঠাৎ বদলিকৃত এক প্রকৌশলীর গ্র্যাচুইটি ভাতা প্রদানের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পৌরসভার হিসাবরক্ষক ও সহকারী প্রকৌশলীকে বের করে দিয়ে কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন কর্মচারী। সরজমিন গিয়ে এই দুই কর্মকর্তার কার্যালয়ে তালা ঝুলতে দেখা গেছে।
জানতে চাইলে ফোনে হিসাবরক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় চেক প্রস্তুত করা হয়েছে। কর্মচারীরা কক্ষে তালা লাগিয়েছে। সেজন্য বাড়িতে চলে এসেছি বলেই ফোন কেটে দেন তিনি। এদিন পৌরসভায় সেবা নিতে এসেছিলেন ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলঙ্গী এলাকার বাসিন্দা ফারিহা ফাতেমা রোজা। তিনি বলেন, বাচ্চার পাসপোর্ট করবো। সেজন্য রোববার জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি দিয়ে গিয়েছিলাম। সোমবার নিতে এসে দেখি তালা ঝুলছে। কাজ বন্ধ রয়েছে। তার ভাষ্য, অনেকেই সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন।
অনেক বছর আগে থেকেই কর্মচারীদের বেতন বকেয়া রয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমারখালী পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, কর্মবিরতির বিষয়টি জানতে পেরেছি। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।

 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status