ঢাকা, ২৫ মে ২০২৫, রবিবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৬ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

রামপাল-রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের রাস্তা খোঁজা উচিত : আনু মুহাম্মদ

স্টাফ রিপোর্টার
২৫ মে ২০২৫, রবিবার
mzamin

রামপাল ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করা উচিত বলে মনে করেন অর্থনীতিবীদ আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলের পরিস্থিতি এখন নাজুক। উপকূলীয় এলাকায় প্রকল্প করে আরও ঝুঁকি তৈরি করেছে বিগত সরকার। তাদের আমলে তৈরি হওয়া রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ভারতের আধিপত্যের প্রতীক। বর্তমান সরকারের উচিত এ প্রকল্পটি বন্ধের পথ বের করা। তাতে সাময়িক যে আর্থিক ক্ষতি হবে, তা বিগত সরকারের জ্বালানি খাতের দুর্নীতিবাজদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। রামপাল, মাতারবাড়ী ও রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করে অর্থনীতিতে বোঝা তৈরি করে গেছে বিগত সরকার। সেই বোঝা দূর করায় অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। আদানির (ভারতীয় প্রতিষ্ঠান) সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তিটিও জাতীয় স্বার্থবিরোধী। এসব চুক্তি বাতিলের পথ খুঁজতে হবে। শনিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘বিগত শাসনামলে জ্বালানি খাতে লুণ্ঠনের দায়- শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ছায়া সংসদে সভাপতিত্ব করেন- ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। 
আনু মুহাম্মদ বলেন, বিভিন্ন সরকারের সময়েই দুর্নীতি হয়েছে। তবে দুর্নীতির সব রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে। এটা দেখে আগের দুর্নীতিবাজেরা আফসোস করতে পারেন যে তারা তো কিছুই করতে পারেননি। আর দুর্নীতির সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র ছিল বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এ খাতে দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বেশির ভাগই দেশ থেকে পালিয়ে গেলেন। এর তদন্ত হওয়া দরকার। তিনি আরও বলেন, ক্যাপাসিটি চার্জ একটা ভয়াবহ দুর্নীতির আখড়া ছিল। কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই লক্ষ কোটি টাকা নিয়ে গেছে। আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তিটিও জাতীয় স্বার্থ বিরোধী। ক্যুইক রেন্টাল আর চালু রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। জ্বালানি খাতের দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বেশির ভাগই দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। তারা কীভাবে পালালো তা তদন্ত হওয়া দরকার। বিগত আমলে জ্বালানি খাতের দুর্নীতিবাজদের শনাক্ত করে তাদের তালিকা প্রকাশ করা উচিত। তা না হলে তারা মুখোশ পাল্টে আবারও একই অপরাধে লিপ্ত হবে।  
ছায়া সংসদে সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির পক্ষ থেকে ১০ দফা সুপারিশ করেন: ১. বিগত সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে  সম্পাদিত সকল চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করে জনসম্মুখে প্রকাশ করা। কোন চুক্তি দেশের স্বার্থ বিরোধী হলে তা বাতিল করা। ২. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে জ্বালানি খাতের মাফিয়াদের বিচার করা। ৩. বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) এর দুর্নীতি  অনুসন্ধানে ফরেনসিক অডিট করা। ৪. এলএনজি আমদানির দিকে না ঝুঁকে নিজস্ব গ্যাস-কয়লা অনুসন্ধান ও  উত্তোলন করা। ৫.ধারণা করা হয় আমাদের অফসরে অর্থাৎ বঙ্গোপসাগরে বিপুল পরিমাণে গ্যাস ও তেলের মজুত রয়েছে। তা উত্তোলনের ব্যবস্থা করা। ৬. বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম নির্ধারণে জবাবদিহিমূলক ও স্বচ্ছ গণশুনানি নিশ্চিত করে নিরবিচ্ছিন্ন মানসম্পন্ন জ্বালানি সরবরাহ করা। ৭. ব্যয়বহুল ক্যুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে বেরিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানি ও টেকসই বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দেওয়া। ৮. বিদ্যুতের চাহিদা ও উৎপাদন সক্ষমতা নির্ণয় করে প্রয়োজনীয় সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা। ৯. গ্যাস ও কয়লা উত্তোলনে বিদেশি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ১০.বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল, কয়লা, ফার্নেস ওয়েল ইত্যাদি সঠিক মূল্যে আমদানি নিশ্চিত করা। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে সঠিক পরিকল্পনার অভাবই জ্বালানি খাতে লুন্ঠনের প্রধান কারণ- শীর্ষক ছায়া সংসদে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, অধ্যাপক তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক রিশান নসরুল্লাহ ও সাংবাদিক মো. মহিউদ্দিন।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status