ঢাকা, ২৫ মে ২০২৫, রবিবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৬ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

জাতীয় কবির ১২৬তম জন্মবার্ষিকী ঢাবিতে কর্মসূচি আজ

স্টাফ রিপোর্টার
২৫ মে ২০২৫, রবিবার
mzamin

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ (রোববার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উদ্‌যাপিত হবে। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ সকাল সোয়া ৬টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমবেত হবেন। সেখান থেকে তারা সকাল সাড়ে ৬টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা সহকারে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। পরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে কবি’র সমাধি প্রাঙ্গণে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একাধারে কবি, গীতিকার, সুরকার, নাট্যকার, সাংবাদিক, দার্শনিক ও সমাজচিন্তক। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে যার স্থান চিরভাস্বর। তার সাহিত্যকর্ম ও সংগীতশিল্পী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে, সমাজ পরিবর্তনের পথ দেখায়। কাজী নজরুল ইসলাম একটা প্রতিষ্ঠান ও আন্দোলনের নাম, যুগে যুগে এক জীবন্ত আদর্শ। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, সংগীত আর দর্শনেও নজরুলের অনবদ্য উপস্থিতি বর্ণাঢ্য করেছে বাংলা সাহিত্যকে। কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনের সূচনা হয়েছিল দারিদ্র্য আর সংগ্রামের মধ্যদিয়ে। ছোটবেলায় পিতৃহারা নজরুল মসজিদের মোয়াজ্জিন হিসেবে কাজ করেছেন, লেটো গানে অংশ নিয়েছেন। কঠিন জীবনসংগ্রাম তাকে দমাতে পারেনি। তিনি সাহিত্য ও সংগীতের মাধ্যমে সমাজের বৈষম্য, শোষণ, কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন।

 কবি কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য জীবনের সূচনা ঘটে বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে। তৎকালীন প্রভাবশালী কবি-সাহিত্যিকদের সংস্পর্শে আসেন তিনি। ১৯২২ সালে প্রকাশিত হয় তার বিখ্যাত কবিতা ‘বিদ্রোহী’ যা বাংলা সাহিত্যে সৃষ্টি করে নতুন এক ধারা। এই কবিতায় কবি নিজের আত্মাকে রূপ দিয়েছেন এক বিরাট শক্তিতে, যিনি অন্যায়, শোষণ ও ভণ্ডামির বিরুদ্ধে উচ্চারণ করেন সাহসের ঘোষণা। এই কবিতা কবি কাজী নজরুল ইসলামকে শুধু সাহিত্যের জগতে নয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনেও পরিচিত করে তোলে। তার লেখা প্রবন্ধ, কবিতা ও গল্প বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে গণচেতনাকে উজ্জীবিত করে। কাজী নজরুল ইসলামের অমর সৃষ্টি প্রায় চার হাজার গান লিখে ও সুর দিয়ে বাংলা সংগীতকে সমৃদ্ধ করেছেন। তার গানে আছে প্রেম, প্রতিবাদ, ধর্মীয় ভাব, আধ্যাত্মিকতা এবং সাম্যবাদের স্পষ্ট প্রকাশ। কাজী নজরুল ইসলাম তার গদ্য সাহিত্যে তুলে ধরেছেন সমাজে বিদ্যমান কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ। তার উপন্যাস ‘মৃত্যুক্ষুধা’ ও ‘কুহেলিকা’ প্রগতিশীল চিন্তার ধারক। যুগবাণী, দুর্দিনের যাত্রী, রাজবন্দির জবানবন্দি প্রভৃতি প্রবন্ধগ্রন্থে তিনি সমসাময়িক সমাজ ও রাজনীতির নির্ভীক সমালোচনা করেছেন। সাহিত্যের পাশাপাশি সংগীত ও চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেছেন নজরুল। নিজের পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘ধ্রুব’তে অভিনয়ও করেছিলেন। ১৯৭২ সালে কবি নজরুলকে সপরিবারে নিয়ে আসা হয় স্বাধীন বাংলাদেশে। এরপর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশেই ছিলেন। ১৯৭৬ সালের ২৯শে আগস্ট তৎকালীন পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। কবির ইচ্ছা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status